আর্কাইভ থেকে ইসলাম

রমজান মাসে জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত

শুক্রবার বা জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের সেরা দিন।আর পবিত্র রমজান মাসে জুমার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এত বেশি যে, কুরআনে 'জুমা' নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করা হয়েছে।

আল্লাহ তা'আলা কুরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও।

এই দিনে মহান আল্লাহ তা’আলা বিশ্ব সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন। ইসলামের দৃষ্টিতে এই জুমা ও জুমাবারের রাত-দিন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ। দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিনও বলা হয়েছে। কেননা, জুমার দিনের সওয়াব ও মর্যাদা ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহার মতোই।

হাদিস দিয়ে প্রমাণিত অন্য সময়ের চেয়ে রমজান মাসের আমলের নেক দশ থেকে একশ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। তাই রমজান মাসের জুমা গুরুত্বও অন্য মাসের চেয়ে বেশি।

রমজানে ইবাদত সম্পর্কে হযরত আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তান ভালো কাজের প্রতিদান দশ থেকে সাতশ’ গুণ বেশি পাবে। রোজা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ নিজেই এর প্রতিদান দেবেন। (মুসলিম–২৭০৭)

হযরত মুহাম্মদ (সা) এক হাদিসে বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)

জুমার দিন দোয়া কবুল হওয়ার প্রসঙ্গে নবী (সা.) আরও এরশাদ করেছেন, জুমার দিন দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সেই সময়টা পায়, আর তখন যদি সে নামাজে থাকে, তাহলে তার যেকোনো কল্যাণ কামনা আল্লাহ পূরণ করেন। (বুখারি, হাদিস নম্বর ৬৪০০)

তিনি আরও বলেছেন, মহান আল্লাহর কাছে জুমার দিনটি ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহার দিনের মতো শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদাসম্পন্ন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৮৪)

আব্দুল্লাহ্ ইবনে ইউসুফ (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবত (ফরজ) গোসলের মতো গোসল করে সালাতের জন্য আগমন করে, সে যেন একটি উট কোরবানী করল।

যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে, সে যেন একটি গাভী কোরবানী করল। যে ব্যক্তি তৃতীয় পর্যায়ে আগমন করে, সে যেন এক শিং বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানী করল।

জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনা করে প্রতিটি মুসলিমের উচিত দিনটিকে কাজে লাগানো। দিনটিতে মহান আল্লাহর ইবাদত করা এবং প্রার্থনায় নিজের ও সমগ্র মানবতার জন্য কল্যাণ-সৌভাগ্য ও উন্নতির দোয়া করা উচিত।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন