বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতার তদন্ত চায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সহিংসতার সব ঘটনা দেশটির কতৃপক্ষকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা ও সমর্থকদের লক্ষ্যবস্তু করছে। এমনকি উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করেছে- এমন মামলাও তদন্ত করা উচিত। জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
রোববার (২৬ নভেম্বর) এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে এ বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত, নিরপেক্ষভাবে সহিংসতার সব ঘটনা তদন্ত করা। এর মধ্যে এমন সব ঘটনাও আছে, যে ক্ষেত্রে একপক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গেলো ২৮ অক্টোবর প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একটি পূর্বপরিকল্পিত সমাবেশের পর থেকে প্রায় ১০ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলমান সহিংসতায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া-বিষয়ক জ্যেষ্ঠ গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক অংশীদারদের কাছে দাবি করছে, তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু একই সঙ্গে দেশটির রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বিরোধীদের দিয়ে কারাগার ভরছে। সরকার যখন মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করে এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তার, গুম, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে বিরোধী দল, সমালোচক ও কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে অক্ষম করে- তখন একটি অবাধ নির্বাচন অসম্ভব।
তিনি বলেন, সহিংসতা উস্কে দিয়ে সমালোচকদের কারাগারে পাঠানোর পরিবর্তে শেখ হাসিনার উচিত অবিলম্বে নির্বিচারে রাজনৈতিক গ্রেপ্তার বন্ধের আহ্বান জানানো এবং স্পষ্ট করে বলা যে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুম, নির্যাতন ও হত্যা সহ্য করা হবে না।
জুলিয়া ব্লেকনার আরও বলেন, বাংলাদেশের কূটনৈতিক অংশীদারদের এই বিষয়টি স্পষ্ট করা উচিত যে, সরকারের কর্তৃত্ববাদী দমন-পীড়ন ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে বিপন্ন করবে।
১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষাৎকার, বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভিডিও এবং পুলিশ রিপোর্টের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রমাণ পেয়েছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ, গণনির্বিচারে গ্রেপ্তার, জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য সাম্প্রতিক নির্বাচন-সংক্রান্ত সহিংসতা দায়ী।