আর্কাইভ থেকে জাতীয়

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান জাফর উল্যাহকে শোকজ

আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে শোকজ করা হয়েছে। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এবং দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাফর উল্যাহকে শোকজ করে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ফরিদপুর-৪ নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরীর সই করা এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কাজী জাফর উল্যাহকে পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গঠন করা নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে উপস্থিত হয়ে এ শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজের নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনি ফরিদপুর-৪ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোয়নপত্র দাখিল করেছেন, যা গত ৪ ডিসেম্বর রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ফরিদপুর কর্তৃক বৈধ মর্মে বিবেচিত হয়েছে। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী মজিবুর রহমান চৌধুরী ১৩ ডিসেম্বর এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন যে, আপনি ১৩ ডিসেম্বর ভাঙ্গা উপজেলাধীন শেখপুরা বাজারে মাইক ব্যবহার করে গণসংযোগ ও পথসভা করে নির্বাচনি কার্যকলাপ চালিয়েছেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়েছে। ওই ভিডিও পর্যালোচনায় পরিলক্ষিত হয়েছে যে, আপনি ভাঙ্গা উপজেলাধীন শেখপুরা বাজারে আগত সর্বসাধারণ, ব্যবসায়ী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং কুশল বিনিময়কালে একটি সভায় যোগদান করেছেন এবং ওই সভায় বক্তব্য প্রদানকালে আপনি নিম্নরূপ উক্তি করেছেন- ‘এমপি তো যে আছে সে তো আমাদের এলাকার না। সে হলো মাদারীপুর থেকে শিবচরের। সেই আসছে এখানে বালি কাটতে, সে আসছে টাকা বানাতে, আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে কি সে আসছে? সে বলে, কাজী মাহাবুল্লাহ একটা চোর। সে বলে যে, আমি ফকিরের গোষ্ঠীর লোক, ফক্কিনির ছেলে। আপনারা বুঝতে পারছেন যে আমারে যদি এ কথা কয়, কাজী মাহাবুল্লাহরে যদি এই কথা কয় তাহলে আপনাদের কি অবস্থা করবে। তার যে কতটা হিংসা, বিদ্বেষ।’

শোকজ নোটিশে আরও বলা হয়, ‘আপনার ওইরূপ বক্তব্য সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ১১(ক) এর পরিপন্থি। একই সঙ্গে আপনি ওই সভা সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি গ্রহণ ও স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে সভায় অংশগ্রহণ করে ওই বিধিমালার বিধি ৬(খ) ও ৬(গ) লঙ্ঘন করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়া আপনি ওই সভায় বক্তব্য প্রদানকালে আরও উল্লেখ করেছেন যে, ইনশাআল্লাহ এবার আমরা প্রমাণ করে দিব এই এলাকার মানুষ নৌকাকে ভালোবাসে। নৌকা প্রতীককে ভোট দিবে। কাজী জাফর উল্লাহকে ভোট দিবে যা ওই বিধিমালার বিধি-১২ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আপনি ওইরূপ কার্যক্রমের মাধ্যমে সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ১১(ক), ৬(খ) ও ৬(গ) এর বিধান এবং তৎসহ বিধি ১২ এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন, যা নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্রে কেন বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রেরণ করা হবে না- এই মর্মে আগামী ১৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে কমিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, ২য় আদালত, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ফরিদপুরে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন