আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

৯৯৯ ফোন,পুলিশ আসা মাত্রই মারপিট শুরু

বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রতিপক্ষ ঘর তুলছে এমন অভিযোগে ৯৯৯ ফোন দেন অপরপক্ষ। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছার সাথে সাথে ৯৯৯ অভিযোগকারী দল লাঠি সোটা, লোহার রড ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে প্রতিপক্ষের উপর। এতে প্রতিপক্ষের অনন্তত্য ৭ থেকে ৮জন আহত হন। অপরদিকে মারপিটের শিকার দলের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের  মটরসাইকেল ও হেলমেট আটকিয়ে রাখে ঘন্টা খানেক সময়।

এসময় ওই দুই পুলিশের সাথে খারাপ আচরণও করে ক্ষিপ্ত নারী-পুরুষ। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে  মটর সাইকেলটি ও হেলমেট উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামের সুবলপাড় এলাকায়। 

জানা যায়, বাহের কেদার গ্রামের সুবলপাড় বাজার এলাকার মৃত্যু বাহাদ্দি মিয়ার দুই ছেলে আব্দুস ছাত্তার এবং আব্দুল আউলের মাঝে ১৬ শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে ওই জমিতে ঘর উঠাতে যায় আউয়ালের পক্ষের লোকজন। এতে আব্দুস ছাত্তার ৯৯৯ ফোন করলে কচাকাটা থানা ঘটনাস্থলে এসআই রবিউল ইসলাম ও একজন কনস্টেবলকে পাঠায়।

আউয়ালের অভিযোগ ওই দুই পুলিশ সদস্য ঘটনা স্থলে পৌছা মাত্র সাত্তার তার তিন ছেলে এমদাদুল, মাইদুল, সাফি, সহযোগী বজলু ফজলুসহ ১৫ থেকে ২০জন লোক নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ চালায়। মারপিটে আউয়ালের পক্ষের খয়বর আলী (৬০) রবিউল ইসলাম (৪২) খালেদা (২৬) মমিনা (৩২), আউয়াল (৪০),খাদিজাসহ (৩০) সাত থেকে আটজন আহত হন। গুরতর আহত ৪জনকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। 

আউয়াল আরোও জানান, তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৩৪শতক জমির মধ্যে ১৬শতক জমি খয়বর আলীর কাছে বিক্রি করি। খয়বর  দীর্ঘদিন থেকে ওই জমিতে বাড়ি তুলে বসবাস করছেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই বড় ভাই আব্দুস সাত্তার ওই জমি জবরদখলের চেষ্টা করে আসেছে। আজ আমরা বাড়িটিতে একটি পাকের ঘর তুলতে গেলে সাত্তার পুলিশ ডেকে নিয়ে আসে এবং পুলিশের উপস্থিতে আমাদের লোকজনকে বেদম মারপিট করে। 

তিনি আরোও জানান, মারপিট শেষে ছাত্তারের লোকজন নির্বিঘেœ নিরাপদে চলে যায়। এদিকে আমার পক্ষের উত্তেজিত নারীরা ওই দুই পুলিশ সদস্যের মটরসাইকেল ও হেলমেট সরিয়ে রেখে ওই দুই পুলিশকে ঘটনাস্থলেই আটকিয়ে রাখেন।  পরে থানা থেকে আরোও পুলিশ আসলে তাদের হাতে মটরসাইকেলসহ হেলমেট বুঝিয়ে দেয়া হয়।

আব্দুস ছাত্তারের ছেলে মাইদুল বলেন, ওই জমির উপর আদালতের অস্থায়ী নিশেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই নিশেধাজ্ঞা অমান্য করে আমাদের বিপক্ষের লোকজন সকাল থেকে ঘর তোলার চেষ্টা করেন। আমরা বাঁধা দিলেও তারা মানেননি। পরে ৯৯৯ ফোন দেই। দুইবার ফোন দেয়ার পর পুলিশ আসে। পুলিশ দেখে তারাই আমাদের উপর হামলা করেন। এবং পুলিশের মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। তাদের হামলায় আমার বাবা আব্দুস ছাত্তার এবং ভাবি নার্গিস গুরতর আহত হন।  
 
এসআই রবিউল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে আটটায় সাত্তার নামক এক ব্যাক্তি ৯৯৯ এ ফোন দেন। সেই ফোন পেয়ে থানার ডিউটি অফিসার আমাকে ঘটনাস্থলে পাঠান। আমাদের ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই মারপিটের ঘটনা ঘটে। পরে আউয়ালের পক্ষের লোকজন আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন। আমার পরিধেয় পোশাক ধরেও টানাটানি করেন এবং আমার বাহন মটরসাইকেল এবং হেলমেট লুকিয়ে রাখেন। 

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি জানান, ওই জমি নিয়ে ইতিপূর্বে কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বরাবরই পুলিশ একটা পক্ষ অবলম্বন করেছে। এজন্য আজ পুলিশের উপর লোকজন কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়েছে। পরে আমি উপস্থিত থেকে মটরসাইকেল ও হেলমেট উদ্ধার করে দিয়ে দেই।

কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। পুলিশের মটর সাইকেল সংঘর্ষের সময় হয়তো কেউ সরিয়ে রেখেছিলো। পরে পাওয়া গেছে।  

 

এসআই/
 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন