আর্কাইভ থেকে এশিয়া

দাউদ ইব্রাহিমকে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা!

ভারতের মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ দাউদ ইব্রাহিম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পাকিস্তানের করাচির একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ইন্ডিয়া টু ডে, ফার্স্টপোস্টসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়,শরীরে বিষক্রিয়ার জেরেই তাকে করাচির ওই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। ভর্তির পরই কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ওই হাসপাতালকে।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’র অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আসতেই পাকিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট সেবা দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে দাউদের অসুস্থতা নিয়ে পাকিস্তান সরকার বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। গত কয়েকমাস ধরেই পাকিস্তানে বসবাসকারী বেশ কয়েকজন ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড লিডার’ মারা গেছেন।এমন পরিস্থিতিতে বর্তমানে করাচিতে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক দাউদ ইব্রাহিমের অসুস্থতার খবর আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,গত দুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দাউদ। তার জন্য হাসপাতালের একটি ফ্লোর পুরো খালি করে দেওয়া  হয়েছে। হাসপাতালের ওই ফ্লোরে  চিকিৎসক ও পরিবারের একেবারে ঘনিষ্ঠরা ছাড়া কারোরই দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি নেই।

এদিকে, করাচির হাসপাতালে দাউদ ইব্রাহিমের ভর্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা পাকিস্তান জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবায় কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। অত্যন্ত ধীরগতিতে ইন্টারনেট পরিষেবা চলছে লাহোর, ইসলামাবাদ, করাচির মতো দেশের প্রধান শহরগুলোতে। রাত ৮টার পরে ইন্টারনেট পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশাল মিডিয়াও কাজ করছে না। পাকিস্তানের তত্বাবধায়ক সরকারের নেওয়া এমন পদক্ষেপের পরই দাউদ ইব্রাহিমের অসুস্থতা নিয়ে জল্পনা আরও বাড়লো।

কে এই দাউদ ইব্রাহিম?

১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ভারতের চলচ্চিত্র নগরী হিসেবে পরিচিত মুম্বাইয়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এসব সিরিজ হামলার অন্যতম মূল হোতা হিসেবে দাউদ ইবব্রাহিমকে মনে করে ভারত সরকার। এর সূত্র ধরেই  ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের নাম সবার নজরে আসে।  ঘটনার দিন প্রথম বিস্ফোরণটি হয় মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে। ২৮ তলা এই ভবনটিতে তখন বহু মানুষ কাজ করছিলেন। বিস্ফোরণে  মারা যান মোট ৮৪ জন। এরপরে প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পুরো মুম্বাইকে আতঙ্কে রেখে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। শেষ বিস্ফোরণটি হয় বিকাল ৩ টা ৪০ মিনিটে। মোট ১৩ টি বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এদিন।

সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানায়। আর আহত হয়েছিলেন ৭০০র বেশি। তবে বেসরকারিভাবে বলা হয়, সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে তিন শতাধিক নিহত ও ১৪০০র বেশি আহত হয়েছিলেন।

বলা হয়ে থাকে, পাকিস্তান থেকেই দাউদ ইব্রাহিম মুম্বাই বিস্ফোরণ হামলার নেতৃত্ব দেন।  দ্বিতীয় বিয়ে করে করাচিতে বর্তমানে বসবাস করছেন বলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তবে পাকিস্তান সরকার ভারতের ওই অভিযোগ বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন