নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছেন তারা গণতন্ত্রের পক্ষে: আরাফাত
আজকের এ নির্বাচনে যারা বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন, তাদের আমি স্বাগত জানিয়েছি। যারা অংশ নিয়েছেন তারা গণতন্ত্রের পক্ষে। আমরা মনে করি, এ নির্বাচনে যারা ভোট দিতে আসছেন, তারা সবাই মিলে ভোট বর্জনকারীদের না বলবেন। এ নির্বাচন হবে ভোট বর্জনের বিপক্ষের নির্বাচন। কাজেই ভোটার বেশি আসলে স্বাধীনতাবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধীদের পরাজিত হবে।বললেন ঢাকা-১৭ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত।
রোববার (৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত। এরপর তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘আমরা ভোটের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে। সবাইকে আহ্বান জানিয়েছি কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেওয়াটা নিশ্চয়ই অনেক আনন্দের। যারা ভোট বর্জনের কথা বলছেন, তারা সবাই আজ চেয়ে চেয়ে দেখবেন কতটা আগ্রহ নিয়ে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। এই যে গণমাধ্যমে সরব উপস্থিতি, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা এসেছেন। আন্তর্জাতিক বিশ্বের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রেও এ নির্বাচন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আগ্রহের কোনো কমতি তো আমরা দেখছি না। একটা পক্ষ আছে যারা ভোটারদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে করে চলেছে। যারা গণতন্ত্রের পক্ষে তারা ভোটারদের হুমকি দিতে পারে না। আর সন্ত্রাস যারা করছেন, তারাও গণতন্ত্রের পক্ষের হতে পারেন না। তারা একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলছে, ভোটাধিকার নিশ্চিতের কথা বলছে। অথচ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন।’
আরাফাত বলেন, ‘অনেক কেন্দ্রে গিয়ে দেখবেন লম্বা লাইন। আপনি কালাচাঁদপুরে যান, মুক্তিযোদ্ধা স্কুল অ্যান্ড কলেজে যান, সেখানেও লম্বা লাইন। অনেকগুলো কেন্দ্রের ছবি-ভিডিও আছে আমার কাছে, যেখানে অনেক ভিড়। এক হাজার কেন্দ্রের মধ্যে দুটিকে হাইলাইটস করে যদি বলেন ভোটার কম, তাহলে তো হবে না।’
গুলশান এলাকার কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে নৌকা প্রতীকের এ প্রার্থী বলেন, ‘আপনি জানেন সকাল বেলা গুলশানবাসী ধীরে-সুস্থে ঘুম থেকে ওঠেন। এটা একটা অভ্যাসগত ব্যাপার। তারা হয়তো কিছু সময় পর আসবেন ভোট দিতে। পুরো ঢাকা-১৭ আসনের চিত্র দেখতে হলে গুলশানের বাইরের কেন্দ্রেও আপনাদের যেতে হবে। আমরা আশা করি পর্যাপ্ত ভোট পড়বে। মানুষ ভোট বর্জনকারীদের না বলার জন্যই ভোট দেবে।’
গুলশানের এক লাখ ভোটার বাইরে অবস্থান করছেন জানিয়ে আরাফাত বলেন, ‘গত উপ-নির্বাচন করে এবং এ নির্বাচন করে আমার অভিজ্ঞতা হলো—নির্বাচন কমিশনের যে ভোটার তালিকা সেখানে ঢাকা-১৭ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজারের বেশি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঢাকা-১৭ আসনের এক লাখ ভোটার এখন এখানে নেই। তারা ইন্টারনাল মাইগ্রেশন হয়। বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছেন। সেজন্য এখানে আসলে হিসাবে তিন লাখ ২৫ হাজার ভোটার থাকলেও আছেন হয়তো ২ লাখের মতো।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ১৫, ১৮, ১৯, ২০ এবং ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে এ আসন গঠিত। আসনটিতে মোট কেন্দ্র ১২৪টি। মোট ভোটার ৩ লাখ ২৩ হাজার ৯৩৫ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৮৩ এবং নারী ১ লাখ ৫৩ হাজার ১৪৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন পাঁচজন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন প্রার্থী। তারা হলেন—নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, বেলুন প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত আশওয়াদ ইসলাম, সোনালী আঁশ প্রতীকে তৃণমূল বিএনপির কাজী শফিউল বাশার, বিএনএফের প্রার্থী টেলিভিশন প্রতীকে এস এম আবুল কালাম আজাদ, কুলা প্রতীকে বিকল্পধারার প্রার্থী আইনুল হক, আম প্রতীকে এনপিপির প্রার্থী গোলাম ফারুক মজনু এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির শাহ আলম একতারা প্রতীকে লড়ছেন। তবে ভোটকেন্দ্রে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট চোখে পড়েনি।