জাতীয়

নির্বাচনে ‘অনিয়মের’ সুষ্ঠু তদন্ত চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের পূর্ণ তদন্ত নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।একইসঙ্গে সব দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেছে।উদ্বেগ জানিয়েছে বিরোধী দলের সদস্যদের আটকের ঘটনায়ও। একইসঙ্গে সব পক্ষকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা পরিহারের আহ্বানও জানায় ইউরোপের ২৭ দেশের এই জোট।

গত রোববার অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর বিষয়টিতে আলোকপাত করে মঙ্গলবার(৯ জানুয়ারি) ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

ইইউ এর বিবৃতিতে আরও বলা হয়,ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মিশনের আসন্ন প্রতিবেদন এবং সুপারিশগুলি প্রকাশ করার জন্য কর্তৃপক্ষের সম্মতিকে স্বাগত জানায়। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার একই চেতনায়,আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই তারা  যেনো নির্বাচনে অনিয়মের যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো যেনো সময় মতো এবং পুর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করে।

নির্বাচনকালীন সহিংসতার যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার নিন্দা জানিয়ে  নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যেন আর সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে সবাইকে এই পথ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায় ইইউ। বিবৃতিতে বলা হয়,নির্বাচনকালে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যথাযথ প্রক্রিয়া এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে ইইউ সম্মান করে এবং সমুন্নত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে। এ ক্ষেত্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের আটকের বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেও উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইইউ সকল পক্ষের অংশগ্রহণে রাজনৈতিক বহুত্ববাদ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের নিশ্চয়তাসহ শান্তিপূর্ণ সংলাপের বিষয়টিকে জোরালোভাবে উৎসাহিত করে থাকে।গণমাধ্যম,সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলো কোনোরকম নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিশোধ পরায়ণতার ভয় ছাড়াই তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে, এমনটা নিশ্চিত করাও জরুরি বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।

বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে বলে জানানো হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, জিএসপি প্লাস অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য স্কিমসহ বাংলাদেশের অন্যান্য সম্ভাব্য সুবিধার বিষয়ে ইইউ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক, মানবাধিকার, বাণিজ্য ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে যাবে।

বাংলাদেশের নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কয়েকমাস ধরে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের তৎপরতা ছিলো উল্লেখযোগ্য ঘটনা। নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ কোনো পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না বলে গ্যালো ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পরববর্তীতে বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল নির্বচনি পরিবেশ পর্যবেক্ষণে ঢাকায় আসেন।

সবশেষ গ্যালো ২৯ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল। ওইসময় থেকে ইসিকে অবাধ ও সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে আসছিলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন