পাবনায় বাড়ছে গরু চুরির ঘটনা
পাবনার ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৯ টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় চোর চক্রের সদস্যরা পিকআপ ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করে খুব সহজেই চুরি করছে। এদিকে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন গবাদি পশু হারিয়ে নিঃস্ব অনেক দরিদ্র কৃষক। তবে সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে জেলায় গরুসহ আন্ত: চোরদলের একাধিক ব্যক্তি আটক হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে মূলহোতারা। তাই থামছে না চুরিও।
ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিন এর ছেলে কৃষক আশরাফুল আলম চেতন (৫৬) জানান, রোববার (১৪ জানুয়ারি) তার গোয়ালঘর থেকে আনুমানিক রাত ৩ টার দিকে ২টি গরু চুরি হয়েছে। যার মধ্যে ১টি গাভী ও ১টি ষাড়। গরু দুটির আনুমানিক মূল্য দুই লাখ টাকা। চুরির ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় জিডি করেছি।
উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত কবির উদ্দিন এর ছেলে আব্দুল বাতেন বিপুল (৩৫) জানান, গেলো শনিবার (১৩ জানুয়ারী) দিবাগত রাতের কোন এক প্রহরে তার গোয়াল ঘরের তালা কেটে আনুমানিক ১ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাভী চুরি করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোর দল। তিনি আরোও জানান, চোর দলের চুরির কাজে পিকআপ ও চোরদের সাপোর্ট দেয়ার জন্য সাদা রঙের হাইচ (মাইক্রোবাস) ব্যবহার করে। চুরির বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি জিডি করা হয়েছে জিডি নং-৮৮১।
পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া থানার পাড়াশিধাই গ্রামের হত দরিদ্র কৃষক আজাহার আলী (৫০) বলেন, ১৩ তারিখ দিবাগত রাতে আমার গোয়াল ঘর থেকে ৩টি গাভী চুরি করে নিয়ে যায় চোরদল। আমরা চোরদের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের রুখতে চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের কাছে ধারালো অস্ত্র (রাম দা, চাপাতি, ছুরি) থাকায় আমরা তাদের ধাওয়া করেও আটকাতে পারি নাই। আমি এখন সর্বহারা হয়ে গেছি। আমার প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
উপজেলার মাজদিয়া ইলশামারি গ্রামের আলতাফ মন্ডলের ছেলে শহিদ মন্ডল জানান, ১০ জানুয়ারী দিবাগত রাতে আমার দুটি বলদ গরু ও একটি গাভী এবং মাজদিয়া পশ্চিম খাঁ পাড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সাইফুল এর বাড়িতে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি করে সংঘবদ্ধ চোর দল।
দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার বলেন, চুরির বিষয়টি আমি শুনেছি। বয়রা-সুলতানপুর থেকে এবং পার্শ্ববর্তী থানার পাড়াশিধাই গ্রাম থেকে দুই দিনের ব্যবধানে ৬টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমি এলাবাসীকে আহবান জানাচ্ছি প্রতিটি গ্রামে রাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করার এবং ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রতি আহবান জানাচ্ছি পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করার জন্য। এর ফলে চুরি ঘটনা কমবে বলে আশা করি।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গবাদি পশু মালিকদের অসচেতনতার কারণেও সুযোগ পাচ্ছে চোরেরা। নিজ বাড়ির গোয়াল ঘর অরক্ষিত দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। আমরা চোরদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি, পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিটি গ্রামে রাতে ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করলে চুরির ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।