আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সিলেট নগরীতে পানি বাড়ছেই, জেলাজুড়ে ২০০ আশ্রয়কেন্দ্র

সিলেটে পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টির বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, জেলাজুড়ে খোলা হয়েছে ২০০ আশ্রয়কেন্দ্র। কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জকিগঞ্জ, সদর ও জৈন্তাপুর উপজেলার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষ শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন। 

আজ বুধবার (১৮ মে ) প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, নগরীর আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, “কিছু সরকারি স্থাপনায় পানি উঠলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না। সব প্রতিষ্ঠানেরই স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বন্যায় জেলাজুড়ে ১৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে । এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএনওদের সার্বক্ষণিক নজরদারি করার নির্দেশনা দেওয়া আছে।বন্যা কবলিতদের জন্য দ্বিতীয় দফায় ১০০ মেট্রিক টন চাল এবং তিন হাজার প্যাকেট শুকানো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ১২৯ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার প্যাকেট শুকানো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বেলা ১২টায় পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের প্রধান নদী সুরমা কানাইঘাট (সিলেট) পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে; তবে এখনও তা বিপৎসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুরমা সিলেট পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সুনমাগঞ্জ পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি অমলসিদ (সিলেট) পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে এখন বিপৎসীমার ১৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে শেওলা (সিলেট) পয়েন্টে নদীটির পানি বেড়েছে আট সেন্টিমিটার; এখন তা বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে যাচ্ছে। 

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের কতিপয় স্থানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। 

 বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে সিলেট নগরীর সাতটি ওয়ার্ডে ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করেছে সিটি করপোরেশন। 
সেগুলো হচ্ছে- ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিরাবাজারস্থ কিশোরী মোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চালিবন্দর রামকৃঞ্চ উচ্চবিদ্যালয় ও চালিবন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাছিমপুরস্থ আব্দুল হামিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুরহান উদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহজালাল উপশহরস্থ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জাজাঙ্গালস্থ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, কাজিরবাজার স্কুল, মনিপুরি রাজবাড়ি আশ্রয়কেন্দ্র ও মাছুদিঘীর, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা স্কুল, ইউনিসেফ স্কুল, কানিশাইল স্কুল, জালালাবাদ স্কুল, বেতের বাজার কাউন্সিলয়ের চতুর্থ তলা বিল্ডিং এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

শ্মশানঘাট সংস্কার ও সংরক্ষণ কমিটি সিলেটের সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, “মহাশ্মশানঘাটের শবদাহ পোড়ানোর চুলা তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে সিলেট নগরের উপকণ্ঠের দেবপুর এলাকার শ্মশানঘাটে দাহকার্য সম্পন্ন করার অনুরোধ করা হয়েছে। 

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন