আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সিলেটে অপরিবর্তিত

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। কয়েকদিনের বন্যায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। অপরদিকে, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। 

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃষ্টিপাত না থামায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় ঢুকে পড়ায় চরম ভোগান্তি পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

২২২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৪৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্যা কবলিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ৪৫০ টি পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩৫ মে. টন মাছ, ৩০ লাখ মাছের পোণা ভেসে গেছে দিয়ে প্রায় আড়াই কোটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বন্যার পানিতে প্রায় এক হাজার হেক্টর বোরো ধান ও বাদাম জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পাকা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের দোহালিয়া এলাকায় বানের পানির স্রোতে একটি সেতু ভেঙে গিয়ে সুনামগঞ্জ সদেরর সঙ্গে ছাতক উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১৪০ মে. টন চাল, ১২ লাখ টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। চাল, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ আছে।

অপরদিকে, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানিবন্দি রয়েছেন অন্তত ১২ লাখ মানুষ। জেলায় নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ঢলের প্রভাব কমে আসায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে।

সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলা কমবেশি এলাকা বানের পানিতে থৈ থৈ করছে।কয়েক হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, অন্যদিকে ঘরে মজুত করা খাবারও শেষ হয়ে গেছে।এমন অবস্থায় বন্যাদুর্গত মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ আছে।

গেলো রাতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ঢলের প্রভাব কমে আসায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে সামান্য কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী রোববারের আগে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির তেমন উন্নতির সম্ভাবনা নেই।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন