গাজায় জাতিসংঘের স্থাপনায় হামলা, নিহত ৯
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে অবস্থিত জাতিসংঘের একটি স্থাপনায় বেসামরিক নাগরিকরা আশ্রয় নিয়েছিল। শহরের পশ্চিম উপকণ্ঠে লড়াইয়ের সময় দুটি ট্যাঙ্ক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয় এবং খান ইউনিসে অবস্থিত সংস্থাটির ট্রেনিং সেন্টারে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৭৫ জন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) আল জাজিরার দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার কমিশনার এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, যুদ্ধের মৌলিক নীতি চরমভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে। তবে এখনও জানা যায়নি যে কারা ওই হামলা চালিয়েছে। সেখানে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
তারা বলছে, তাদের সেনারা সেখানে বিমান হামলা বা অন্য কোনো ধরনের হামলা চালায়নি।
ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, এটা সম্ভবত হামাসের হামলা। তারা এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানানো হয়েছে। ইসরায়েলি সৈন্যরা খান ইউনিসের দিকে অগ্রসর হয়েছে। তারা খান ইউনিসে হামলা আরও বাড়িয়েছে। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা শহরটিকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলেছে।
শহরের দুটি প্রধান হাসপাতালের আশেপাশে সংঘর্ষ ও বোমাবর্ষণের কারণে হাজার হাজার রোগী, কর্মচারী এবং অন্যরা সেখানে আটকা পড়েছেন। তারা সেখান থেকে বের হতে পারছে না।
গাজায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণকে যে ভয়াবহ শাস্তি দেওয়া হচ্ছে তা কোনো কিছু দিয়েই বৈধতা দেওয়া যাবে না।
এর আগে দক্ষিণ খান ইউনিসের চার বর্গ কিলোমিটার (১.৪ বর্গমাইল) এলাকা থেকে প্রায় ৯০ হাজার বাসিন্দা এবং ৪ লাখ ২৫ হাজার বাস্তুহারা লোকজনকে অন্যত্র সরে যাওয়ার আহ্বান জানায় ইসরায়েলি বাহিনী।
এই বিপুল পরিমাণ বেসামরিক নাগরিক গাজার অন্য সব শহর থেকে খান ইউনিসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু গাজার কোনো স্থানই এখন আর নিরাপদ নয়। বিশেষ করে খান ইউনিসে এখন হামলা আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গেলো ৭ অক্টোবর ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যকার সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ হাজার ৪৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ।
গেলো৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই প্রতিশোধ হিসেবে গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের ওপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।