আন্তর্জাতিক

আইসিজের নির্দেশে নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া

ইসরাইল এমন একটি যুদ্ধে লড়ছে, যা অন্য কোনো যুদ্ধের মতো নয়। ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন মেনে দেশ ও নাগরিকদের রক্ষা অব্যাহত রাখবে। বললেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়ের পর এক ভিডিওবার্তায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এ মন্তব্য করেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। তিনি আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান, তবে গণহত্যার অভিযোগকে ‘আপত্তিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

নেতানিয়াহু বলেন, নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত ইসরাইল যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। একইসঙ্গে গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং যারা এ গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্ত রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, গাজার সন্ত্রাসী ও বেসামরিক জনসংখ্যার মধ্যে পার্থক্য করার জন্য নৈতিকতা বিষয়ে কোনো লেকচার শোনার দরকার ইসরাইল রাষ্ট্রের নেই।

ইসরাইলের এই রাজনীতিক আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) করা এক পোস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষ’ বলেও মন্তব্য করেন।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা গেলো ডিসেম্বরে এই মামলা দায়ের করে। শুক্রবার রায় শোনার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী নালেদি প্যান্ডরের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল আদালতে উপস্থিত ছিলো।

মামলার রায়ে আদালত ইসরাইলকে অবশ্যই গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে নির্দেশ দিলেও যুদ্ধ বন্ধ করার কথা বলেনি আদালত।

হামাসের অন্যতম মুখপাত্র সামি আবু জহুরি আদালতের এই রায়কে ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, আদালতের এই রায়ের কারণে ইহুদিবাদী ইসরাইল আরও বেশি একঘরে হয়ে পড়বে এবং তারা যে অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছে তা উন্মোচিত হবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জুহরি বলেন, আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য দখলদারকে এখন বাধ্য করতে হবে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এ রায় কার্যকর করার ক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তবে এই রায়ের ফলে ইসরাইল এবং তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়বে। কারণ যুদ্ধবিরতির জন্য বৈশ্বিক আহ্বান আরও জোরালো হবে।

গেলো অক্টোবরের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন