কাদের-চুন্নুকে অব্যাহতি, জাপার চেয়ারম্যান হলেন রওশন এরশাদ
জাতীয় পার্টি বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিয়েছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। সেই সঙ্গে নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষাণা করলেন রওশন। আর পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত কাজী মানুনুর রশীদকে মহাসচিব ঘোষণা করেন তিনি।
আজ রোববার (২৮ জানুয়ারি) গুলশানে নিজ বাসভবনে নেতাকর্মীদের নিয়ে সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান রওশন এরশাদ।
পরে তার সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে লিখিতভাবে অবহিত করেন রওশন।
তিনি বলেন- আমি বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক- এই ঘোষণা। তিনি বলেন, অতীতে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ব্যর্থতা পর্যালোচনা করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি। আমাদের প্রিয় সংগঠন জাতীয় পার্টি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।
উদাহরণ স্বরূপ:
এক. দ্বাদশ নির্বাচনের আগে দলের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের বক্তৃতা ও বক্তব্য এবং দ্বাদশ নির্বাচনের পর তাদের ভূমিকা দলের মারাত্মক ক্ষতি করেছে।
দুই, জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৭টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে, ২৬টি আসনে আপস করে আসন সমঝোতার পরও জনসমক্ষে তা অস্বীকার করে দেশবাসী ও দলের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দলকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
তিন হাজার ২৬টি আসন সমঝোতার পর বাকি আসনের প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে জনগণের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক তাদের খোঁজখবর না নেওয়ায় ভোটের মাঠে চরম ক্ষতির মুখে পড়ে দলটি। প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হন।
চার, নির্বাচনে কারচুপির কারণে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। কোনো আলোচনা বা সান্ত্বনা ছাড়াই এসব প্রতিবাদী নেতা-কর্মীদের পরিকল্পিত বহিষ্কার ও সাময়িক বহিষ্কার করে গর্তি ধ্বংস হয়ে গেছে।
পাঁচ, সামগ্রিকভাবে দলের অবস্থা বিবেচনা করে ২০২৪ সালের ২২শে জানুয়ারী আমি পার্টির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদককে দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে এবং সকল বহিষ্কার ও অব্যাহতি আদেশ বাতিল করে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় দল গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা তা আমলে নেয়নি।
ছয়. এরই ধারাবাহিকতায় ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পল্লীবন্ধুর ৬৬৮ নেতা-কর্মী স্বেচ্ছায় দল থেকে পদত্যাগ করায় দলে চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
আমার সিদ্ধান্ত:
এক. উক্ত সংকট নিরসনে দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুরোধে এবং দলের গঠনতন্ত্রের ২০/১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত ক্ষমতাবলে আমি জিএম কাদের ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক চুন্নুকে পার্টির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। .
দুই, নেতা-কর্মীদের অনুরোধে দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছি।
তিন, কাজী মোঃ মামুনুর রশীদকে আগামী সম্মেলন পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি সামগ্রিক সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
চতুর্থত, দলের অন্যান্য পদগুলি তাদের মূল অবস্থানে থাকবে এবং দলের যেসব নেতাকে বরখাস্ত বা বহিষ্কার করা হয়েছে এবং যারা পার্টি কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন তাদের পূর্বের পদে পুনর্বহাল করা হবে।
পাঁচ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলের জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হবে।