আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলের নতুন চুক্তিও মেনে নেয়া হবে না: হামাস

ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির নতুন প্রস্তাব নাকচ করেছে হামাস। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ইসরায়েলের দেয়া এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। সংঘাত বন্ধে এবং গাজা থেকে সকল ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারে কার্যকর নয়, এমন কোনো চুক্তি মেনে নেয়া হবে না বলে জানিয়েছে হামাস।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস জানিয়েছে যেকোনো বিনিময় চুক্তি প্রস্তাবের আগে অবশ্যই গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে হবে এবং পুরো অঞ্চল থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।

অন্যদিকে হামাসের কাসাম বিগ্রেডের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা তাহের আল-নুন জানিয়েছেন, হামাস গাজায় যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তুত তবে সেটা সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি হতে হবে, সাময়িক যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাবে এটা সম্ভব নয়।

সোমবার সন্ধ্যায় হামাস একটি বিবৃতি দেয়, এতে তারা স্পষ্ট করে জানায় যে কোনো ধরনের বিরতির শর্ত হলো- ইসরায়েলকে তার সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এরপর জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে আলোচনা হবে।

এছাড়া হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নোনুউ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে যা নিয়ে কথা বলছি সেটি হলো, একটি পূর্ণ এবং বিস্তৃর্ণ যুদ্ধবিরতি। কোনো অস্থায়ী সাময়িক যুদ্ধবিরতি নয়। যখন হামলা বন্ধ হবে; জিম্মি মুক্তিসহ অন্য সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনবিসি জানিয়েছে, নতুন জিম্মি চুক্তির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরাসরি হামাস এ বিবৃতি দিয়েছে কি না সেটি স্পষ্ট নয়। তবে এটি সত্যি যে, নতুন এ চুক্তির প্রস্তাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়নি। আবার এটি পুরোপুরি বাদও দেয়া হয়নি।

প্রায় চারমাস ধরে আকাশ, সাগর ও স্থলপথে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামলা করছে ইসরায়েল। প্রায় পুরো গাজা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। তবে হামাসের মূল শক্তি সেখানকার টানেলের এখনও ৮০ শতাংশই অক্ষত রয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলের তীব্র হামলার সত্ত্বেও হামাসের সুড়ঙ্গের জটিল নেটওয়ার্কের ২০ শতাংশও ক্ষতি হয়নি। এর ৮০ শতাংশ এখনও অক্ষত রয়েছে। আমেরিকান ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলি হামলা সত্ত্বেও হামাসের কয়েকশ কিলোমিটার সুড়ঙ্গের বেশিরভাগ অংশ এখনও সুরক্ষিত।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার ৪২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলা বন্ধের কোনো আশা মিলছে না। এমন অবস্থায় ইসরায়েলের এক মন্ত্রী বলছেন যে, গাজায় যুদ্ধ চলতে পারে এক প্রজন্ম ধরে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে গাজার ৮৫% জনসংখ্যা খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এছাড়া গাাজর ৬০% অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন