স্বামীকে হলকক্ষে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী। এ সময় আন্দোলনকরী শিক্ষার্থীরা ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী অদিতি ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন ঘটনা পুরো দেশের জন্য লজ্জাজনক। আমাদের বাবা-মা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান উচ্চশিক্ষার জন্য। কিন্তু এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমন অবস্থা যে মানুষ হওয়ার কোনও উপাদানই সেখানে নেই। ফলে দেখা যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আজ গণধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। এটা পুরো শিক্ষার্থী সমাজের জন্য লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ধর্ষণের সাথে যুক্ত সকলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবো।’
মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলি ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা রাজাকারের সহযোগিতায় আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করে। আমরা সেই একাত্তরের প্রতিরূপ জাহাঙ্গীরনগরের এই ঘটনায় দেখতে পাই। একটা স্বাধীন দেশে এমনটা কখনও হতে পারে না। আমরা জেনেছি, ওই হলের প্রভোস্ট ওই ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল। যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব ছিল তাদের শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়া সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ ধর্ষকের জন্ম দিচ্ছে। প্রশাসনের জবাবদিহিতার অভাবই এর জন্য দায়ী।’
উল্লেখ্য, গতকাল দিবাগত রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাসহ দু’জনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও বহিরাগত যুবক মামুন (৪৫)।
মোস্তাফিজ মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ঘটনার পর থেকে মোস্তাফিজ ও মামুন পলাতক।