এবারের নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম: প্রধানমন্ত্রী
নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে অনিয়মের কথা বলেতে হবে। বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে ২১ বছর ক্ষমতা জনগণের হাতে ছিল না। ক্ষমতা বন্দী ছিল ক্যান্টনমেন্টে। জনগণের কোনো অধিকার ছিল না। আওয়ামী লীগ ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০০১ সালে ভোটচুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। এরপর ২০০৬ সালেও ভোটচুরি করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেছিল তারা। নির্বাচনকে কলুষিত করা শুরু হয় জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই। এবার তাদের চক্রান্ত ছিল জাতীয় নির্বাচনটা যাতে না হয়। অনির্বাচিত সরকার চায়। যারা নিজেরাই ভোটচুরি করে ক্ষমতায় ছিল, মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিল, গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই তাদের।
তিনি বলেন, আমি তো আলোচনা-সমালোচনার সব পথ উন্মুক্ত করে রেখেছি। আমাদের ৫২টা টেলিভিশন; ৩৪টা চালু আছে। সব টিভি চ্যানেলে টক শো হয়। টক-ঝাল অনেক কথা হয়। ভালো কাজ করতে গেলে কিছু সমালোচনা আসবেই। তবে, কোনও সমালোচনায় আমাদের মনোবল ভাঙবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, কারচুপি ছাড়া নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সৎ সাহস একমাত্র আওয়ামী লীগেরই আছে। ভোটের আগে স্যাংশনের ভয় দেখানো হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেনি। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন চাইনি বলেই সার্চ কমিটি গঠন করে নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের ব্যবস্থা করি। যে সাহস শুধু দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরই আছে। নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রজাতন্ত্রের সবাই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। তবুও যারা বলছেন, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি। তাদেরকে সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে, কোথায় সমস্যা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ কোনও ভেসে আসা রাজনৈতিক দল নয় জানিয়ে দলের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে বিএনপি বিদেশি কিছু প্রভুদের কথা শুনে লম্ফঝম্ফ করে। এখনো করে যাচ্ছে। করতে থাকুক।
ভোট ও ভাতের অধিকার আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ’৭৬ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত দেশ কোনো খাতেই এগোতে পারেনি। ভোট ও ভাতের অধিকার আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠা করেছে। টানা চার মেয়াদে জনগণের মন জয় করে ক্ষমতায় থাকা সহজ কোনো কাজ নয়। মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি বলেই সম্ভব হচ্ছে। কারণ উন্নয়ন হয়েছে তৃণমূল পর্যন্ত।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০০৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার। সেই লক্ষ্য আমরা পূরণ করেছি। এবার আমাদের ঘোষণা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো। সেই লক্ষ্য পূরণে সব বাধা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত আমরা।
বিশেষ বর্ধিত সভায় শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। সভাটি সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।
সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জেলা-মহানগর ও উপজেলা-থানা-পৌর (জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্য এবং জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।