বাংলাদেশ

পাকিস্তানে আবারও ক্ষমতায় আসছে সেনাবাহিনী!

পাকিস্তানে হয়ে গেল সাধারণ নির্বাচন। ভোট গণনার ফলাফল ঘোষণাও শেষ করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। বরাবরের মতো এবারের নির্বাচনও নাটকীয়তায় ভরা। তবে এবার যেন নাটকের চরিত্র, সংলাপ, ক্লাইমেক্স, সাসপেন্স একটু বেশিই হচ্ছে।

নির্বাচনের ফল ঘোষণা করতেই তিন দিন সময় নিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন! ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ-পিটিআই নির্বাচনে নিষিদ্ধ। আদালত অযোগ্য ঘোষণা করায় তিনি নিজেও লড়তে পারেননি। তারপরও ভোটে দারুনভাবে ভেল্কি দেখিয়েছেন পাকিস্তান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

মোট ২৬৫ আসনের মধ্যে  ২৬৪ আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৯৭ আসনে জয় পেয়েছেন ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই রয়েছে নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ(পিএমএল-এন)। তাদের দখলে গেছে ৭৬টি আসন।  বিলাওয়াল  ভুট্টোর  পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৫৪ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য ছোট দল পেয়েছে ৩৭টি আসন।

তবে কোনো দলই সরকার গঠনে প্রযোজনীয় ১৩৪টি আসন পায়নি। নওয়াজের দলের সঙ্গে নির্বাচিত পিটিআই সমর্থক স্বতন্ত্র এমপিরা কোনোভঅবেই সরকার গঠনে যাবে না। তাই বিলওয়াল ভুট্টোর পিপিপি এখন প্রধান ভরসা নওয়াজ শরিফের। তবে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন-এই ইস্যুতে এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি  মুসলিম লীগ নওয়াজ ও পিপিপি।  তাই সরকার গঠনে দেখা দিয়েছে সমস্যা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার গঠনে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে পাকিস্তান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের জেরে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের সম্ভাবনা পর্যন্ত উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাকিস্তানে এধরণের একাধিক নজির রয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে চারটি ঘটনার মধ্যে যেকোনো একটি  ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রথমটি হলো-পিপিপির বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ও অন্য ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট করে সরকারে আসতে পারেন নওয়াজ শরিফ।

দ্বিতীয়টি হলো-ইমরান খানের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অন্য দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তৃতীয়টি হলো-জোট সরকারের প্রধান নিজ দল থেকে করার জন্য চাপ দিতে পারে পিপিপি। কেননা পিপিপি ছাড়া কোনো দলই সরকার গঠন করতে পারবে না। ইতিমধ্যে বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি  নওয়াজ শরিফের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ দাবি করেছে বলে দেশটির মিডিয়াগুলোতে খবর বেরিয়েছে।

আর চতুর্থ ও শেষটি হলো- উপরের কোনোটাই যদি না হয় তাহলে পাকিস্তানের শাসনভার সেনাবাহিনী গ্রহণ করতে পারে। এমন ঘটনা যদি ঘটেই যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ এধরণের ঘটনা আগেও ঘটেছে। দেশটির ৭৬ বছরের ইতিহাসে ৩০ বছর শাসন করেছে পরমাণু শক্তিধর দেশটির সেনাবাহিনী।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন