আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা অযৌক্তিক : সাধারণ নাগরিক সমাজ

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে ঘোষণা দিয়েছে তা অযৌক্তিক, অন্যায়, অগণতান্ত্রিক এবং অমানবিক। এমনটাই মনে করছে বাংলাদেশে সাধারণ নাগরিক সমাজ।

আজ রোববার (৫ জুন) গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ নাগরিক সমাজের পক্ষে এক বিবৃতিতে সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। 

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে প্রস্তাব পেট্রোবাংলা ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো করেছিল তা সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক এবং সিন্ডিকেটের প্রস্তাব ছিল। গণশুনানিতে প্রস্তাব বৃদ্ধির পক্ষে তারা তাদের যুক্তিযুক্ত প্রমাণ তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিল। উল্টো ভোক্তা সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের পক্ষে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছিলাম যে দুর্নীতি, অপচয় এবং সিস্টেম লস এর নামে লুটপাট এবং বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা দেওয়া বন্ধ করলে দাম আরো কমানো সম্ভব।

তিনি বলেন, কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশন আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিল ন্যায়সঙ্গত ও যুক্তি প্রমাণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অথচ কমিশন তাদের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির গণশুনানিতে করা প্রস্তাব ২৩.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ আজ ঘোষণা দিয়ে প্রমাণ করল গণশুনানি কেবল নামেমাত্র। মানে নাগরিক ভাবনা প্রতিনিধিদের যুক্তি কোনো আমলে নেয়া হয় না। যা অত্যন্ত দুঃখজনক । বর্তমানে দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের অসঙ্গতি এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া হয়নি। এমনকি আজকে দেশের একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মানুষ যখন জীবন বাঁচাতে অস্থির এমন সময় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রহসন ছাড়া কিছু না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনি দেশের অভিভাবক, তাই বর্তমান সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ আদেশের মাধ্যমে এই মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করবেন।

প্রসঙ্গত, রোববার এক ভার্চুয়াল সম্মেলনের মাধ্যমে গ্যাসের নতুন দর ঘোষণা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু ফারুক। 

সেখানে জানানো হয়, আবাসিকে এক চুলার বর্তমান দাম ৯৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯০ টাকা, দুই চুলা ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৮০ টাকা করা হয়েছে। প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮ টাকা, সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দর ঘনমিটারপ্রতি ৪ দশমিক ৪৫ টাকা থেকে  বাড়িয়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া সার উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ২৫৯ শতাংশ, বৃহৎ শিল্পে ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, বিদ্যুতে ১২ শতাংশ, ক্যাপটিভে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে। গড়ে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ল গ্যাসের দাম।

মির্জা রুমন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন