স্ত্রীকে নিঃস্ব করে ২৭ বছর পর তালাক!
স্ত্রীকে নিঃস্ব করে ২৭ বছর পর তালাক দিলেন স্বামী। একই সঙ্গে স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার চেকের ডিজঅনার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার নারায়ণপুরের সুখনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আনসার বাহিনীতে চাকরির সুবাদে প্রায় ২৭ বছর আগে পরিচয় হয় ফিরোজ আহমেদ ও মাহাফুজা আক্তারের। পরে তাদের বিয়ে হয় ও সংসারে আসে দুই সন্তান।
তবে শুরু থেকেই সন্তানদের বেড়ে ওঠা ও খোঁজ খবর নেয়ার ব্যাপারে ফিরোজ আহমেদের তেমন আগ্রহ ছিল না বলে অভিযোগ মাহাফুজার।
মাহাফুজার আরও অভিযোগ, সংসারেও মন ছিল না তার। নেশা ছিল শুধুই টাকার। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর বেতনও নিয়েছিলেন নিজের কবজায়। কৌশলে ব্যাংক থেকে স্ত্রীর নামে নেন মোটা অঙ্কের ঋণ। ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নিয়ে রেখে দেন নিজের কাছে। তবে তখনও স্বামীর আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পারেননি মাহাফুজা আক্তার। এরপর বাড়িসহ সমস্ত সম্পত্তি নিজের করে নিয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার চেক ডিজওর্নার মামলা দেন ফিরোজ আহমেদ।
সর্বশেষ ২৭ বছরের ছলচাতুরীর সংসার শেষে চলতি মাসের ১১ ফেব্রুয়ারি পাঠিয়ে দেন তালাকনামা। ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার নায়ারনপুরের সুখনগর এলাকায়।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) গাইবান্ধা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মাহাফুজা আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন সাংবাদিকের কাছে। তিনি বলেন, আমার স্বামী এতবড় প্রতারণা করবে আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। ২৭ বছরের সংসারে সমস্ত গ্লানি মুখ বুজে সহ্য করেছিলাম। কিন্তু আমার শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে তালাক জুটলো আমার কপালে!
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর আগে চিকিৎসা ও ঋণ পরিশোধের কথা বলে দুটি ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নেন ফিরোজ। পরে আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে গেলো বছর জানুয়ারিতে তার ছোট ভাই রাশেদুল ইসলামকে দিয়ে প্রথমে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং রাজ্জাক মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার চেক ডিজঅর্নার মামলা দেন। এখানেই শেষ নয়, আমার নামে আনসার ভিডিপি ব্যাংক থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ তুলে নেয়। যা এখন আমি নিজেই পরিশোধ করে আসছি। আমার চাকরি জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে তৈরিকৃত বাড়িও সমস্ত সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাড়ি উচ্ছেদ মামলা দায়ের করে। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগসহ বিছিন্নসহ সর্বশেষ গেলো ১১ ফেব্রুয়ারি আমাকে তালাক দেয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমার স্বামী বান্দরবান জেলায় আনসার ব্যাটালিয়ানে কর্মরত। তিনি আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করে আমাকে ও আমার সন্তানদের পথে বসিয়েছেন। সারা জীবনের অর্জিত সম্পদ হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব।
তিনি বলেন, এমন প্রতারণার বিষয়ে আমি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু সেই মামলার তেমন অগ্রগতি নেই। আমি আপনাদের মাধ্যমে এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।