‘প্রসেসড ফুড’ ক্যানসারসহ ৩২টি রোগের কারণ, গবেষণা
বেশিরভাগ কর্মজীবী মানুষই ভরসা রাখেন প্রসেসড ফুডে। তবে অনেকদিন আগে তৈরি হয়ে আসা খাবার, যেগুলো বহুদিন পরেও নষ্ট হয় না, এমন খাবার খেতে নিষেধ করছেন বিজ্ঞানীরা। প্রসেসড ফুড খেলেই ঘটতে পারে নানা বিপদ। এতে বেড়ে যেতে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি। এছাড়া আরও গুরুতর অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
প্রক্রিয়াজাত এই খাবার খাওয়া কতটা ভয়ানক, তার পরিমাণ জানতে বিশেষ গবেষণাও করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটির সহযোগী গবেষক ফেলো মেলিসা এম. লেন গণমাধ্যমে বলেছেন, এই গবেষণাটি জনসংখ্যার স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষ্যে প্রসেসড ফুড খাওয়ার প্রবণতা কমানোর জন্য করা হয়েছে। সুস্থ থাকতে যত দ্রুত সম্ভব খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। তাই প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলুন।’
বৃহস্পতিবার বিএমজে-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রসেসড ফুড ক্যানসার, হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের কঠিন রোগ, মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধিসহ ৩২টি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি এসব খাবার মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, প্যাকেট করা বেকারি আইটেম, স্ন্যাকস, হিমায়িত পানীয়, চিনিযুক্ত সিরিয়াল এবং খাওয়ার জন্য রান্না করা বা পুনরায় গরম করা খাবারসহ উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার শারীরিক ক্ষতি ডেকে আনে। এসব খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ক্ষতিকারক মশলা, সুন্দর দেখানোর জন্য প্রায়শই রঙ থাকে। এই খাবারে সাধারণত অতিরিক্ত চিনি, চর্বি অথবা লবণ থাকে, ভিটামিন এবং ফাইবার কম থাকে।
অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং আয়ারল্যান্ডের একটি আন্তর্জাতিক গবেষকদের দল পরীক্ষা করে দেখেছেন যে বেশি পরিমাণে প্রসেসড ফুড খেলে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। উদ্বেগ ও সাধারণ মানসিক রোগের ঝুঁকি ৪৮-৫৩ শতাংশ বাড়ায় এসব খাবার। এছাড়া টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
গবেষণাটি প্রায় ১০ মিলিয়ন অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে করা ১৪টি পর্যালোচনা রিপোর্ট থেকে ৪৫টি আলাদা ভাবে মেটা-বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। এতে আরও প্রমাণ মিলেছে যে প্রসেসড ফুড মৃত্যুর ঝুঁকি ২১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে এবং হৃদরোগ, মোটা হওয়া, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং ঘুমের সমস্যা সম্পর্কিত মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ থেকে ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। আবার মানসিক ভাবে ভারসাম্য হারিয়ে বিষণ্ণতার ঝুঁকিও ২২ শতাংশ বৃদ্ধি করে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশে এই জাতীয় খাবার প্রায় ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত খাওয়া হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের মানুষও প্রচুর পরিমাণে এই ধরনের খাবার খাচ্ছেন।
এএম/