চট্টগ্রামবাসীর বহুবছরের অভিশাপ ‘পাহাড় ধস’
বহুবছর ধরেই চট্টগ্রামবাসীর জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধস। প্রতিবছর পাহাড় ধসে মারা যান এখানকার বহু মানুষ। অথচ একের পর এক মৃত্যুর পরও কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো পাহাড়ের পাদদেশে বাস করছে লক্ষাধিক মানুষ।
গেলো শানিবার ভোর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বরিশালঘোনা এলাকায় প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে প্রাণ হারান দুই বোন মাইনুর ও শাহিনুর। অন্যদিকে, নগরীর ফয়েস লেকভিউ এলাকায় মৃত্যু হয় লিটন ও ইমন নামে আরো দুজনের। আহত হন ১১ জন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর কিছুদিন প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেলেও, বছরের পর বছর ধরে চলা এ সমস্যার কোন স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী অনেকে মাটি চাপা পড়ে প্রাণ হারান।
সরকারি হিসেবে বলছে, ২০০৭ সালে পাহাড় ধসে জেলাটিতে সবচেয়ে বেশি ১২৭ জনের প্রাণহানী হয়। এরপরও থেমে থাকেনি মৃত্যুর সংখ্যা। এখনও লক্ষাধিক মানুষ জীবনের ঝঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ধস ঠেকাতে নানা কর্মসূচি হাতে নিলেও পাহাড় দখলকারী কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রভাবে অবৈধ বসবাসকারীদের সরাতে ব্যর্থ হয় স্থানীয় প্রশাসন।
প্রশাসনের অপারগতার পাশাপাশি দারিদ্র এবং পাহাড়ে বসবাসকারীদের অসচেতনতাও এই মৃত্যুর জন্য দায়ী বলে মনে করেন এখানকার জনপ্রতিনিধিরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, পাহাড় ধস রোধে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি এই বিষয়ে সবার সচেতনতা দরকার।
দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা সমাধান এবং মৃত্যুর মিছিল বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ চান চট্টগ্রামবাসী।
মির্জা রুমন