বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বন্যার পানি স্থায়ী হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে বানভাসীদের। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের প্লাবিত হয়ে পড়া ঘর-বাড়ি ও নৌকায় অবস্থান করা মানুষজন। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের সংকটে পড়েছেন তারা। বন্যা কবলিত এলাকায় তীব্র হয়ে উঠছে গবাদি পশুর খাদ্য সংকটও।
এদিকে সরকারী-বেসরকারী ভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন অনেকই।
সদর উপজেলার ভগবতীপুর চরের জোহরা খাতুন জানান, চুলা জ্বালাতে পারছি না। ঘরেরও সবকিছু তলিয়ে আছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।
উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আমির হোসেন জানান, বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকায় নিজেরা তো কষ্টে আছি। এ অবস্থায় গরু ছাগলের খাবারও জোগাড় করতে পারছি না।
সদরের ধরলা সেতু এলাকার সওদাগার পাড়ার বেড়ি বাঁধ সংলগ্ন বন্যা কবলিত মানুষেরা অভিযোগ করেন, কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি দিন যাপন করলেও এখনও কোন ত্রাণ সহায়তা পাননি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সরকারী ভাবে ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি বেসরকারীভাবেও কিছু এলাকায় সামান্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাধ্যমত বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ৯ উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩শ ৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গো-খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। বন্যার পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।