অপরাধ

'অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ এবং ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করা হবে'

যারা প্রতারণা করে গাড়ি-বাড়ি করছেন, বিদেশে অর্থ পাচার করছেন তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হবে। একই সঙ্গে তাদের সব সম্পদ এবং ব্যাংকে রাখা অর্থ ফ্রিজ করা হবে। বললেন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিআইডি প্রধান।

সিআইডি প্রধান বলেন, সম্প্রতি যেকোনো ব্যক্তিকে ফোন করে অথবা ফেসবুকে বিনা বিনিয়োগে অর্থ কামানো যায় বলে প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। তারা ভুক্তভোগীকে ফোন করে বলবে ৩০০ টাকা বিনিয়োগ করলে ৬০০ টাকা পাবেন, বাসায় বসে বিনা পুঁজিতে লাভবান হবেন, নানা কথা বলে আকৃষ্ট করছে।

তাদের ফাঁদে পা দিলেই তারা একটা লিংক পাঠায়। তাতে ক্লিক করলে তারা সে ব্যক্তিকে টোপ হিসেবে কিছু টাকা দিচ্ছে এরপর সেই লিংক বন্ধ করে দিচ্ছে। পরে জিম্মি করে টাকা আদায় করছে চক্রটি। চক্রটির সঙ্গে বিদেশি একটি চক্র জড়িত। সিআইডি চক্রটি নিয়ে কাজ করছে।

তিনি বলেন, যারা প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে টাকা পাচার করছে সিআইডি তাদের কাউকে ছাড় দেব না। ইতোমধ্যে  বেশ কিছু ঘটনায় এরকম অর্থ ফ্রিজ করা হয়েছে। আরও কিছুর কাজ চলমান।

মোহাম্মদ আলী মিয়া জানান, সুমন আল রেজার সঙ্গে প্রতারক চক্রের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে প্রতারক চক্রের এক সদস্য নিজেকে ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের একজন ক্লাইন্টের ৬০ লাখ ডলার ডিপোজিট রয়েছে। ক্লায়েন্ট হাইতিতে থাকেন। সেই ব্যক্তি ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর মারা গেছেন। কিন্তু তার কোনো ওয়ারিশ নেই। এরপর প্রতারক সুমন আল রেজাকে ক্লায়েন্টের ওয়ারিশ হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন। তার ডিপোজিট করা টাকা উত্তোলনের পর দুজনে সমানভাগে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাবও দেন তাকে। এরপর প্রতারক চক্রটি সুমন আল রেজার কাছে লাগেজ ভর্তি ডলার কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর চার্জ বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে।

সেই টাকা দেওয়ার পর প্রতারক চক্রটি ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) দাবি করে। এবার রেজা লাগেজ ভর্তি ডলারের প্রলোভনে পড়ে যান। সেই প্রতারক চক্রের কথামতো ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) গোল্ডেন লজিস্টিক এন্টারপ্রাইজের ডাচ বাংলা ব্যাংক ঢাকার মিরপুর-১০ শাখায় পাঠিয়ে দেন।

রেজা অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখতে পান তার অ্যাকাউন্টে কোনো ডলারই ঢোকেনি। তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় গত বছরে ১৭ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।

উল্লেখ্য, এ মামলায় তপুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন