বেগুনের কেজি ২ টাকা, দিশেহারা কৃষক
পাবনার হাটবাজারে হঠাৎ করেই দরপতন হয়েছে বেগুনসহ অন্যান্য সবজির। বেগুনের পাইকারি হাটে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতি কেজি বেগুনের দাম দাঁড়াচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকায়।
শনিবার (২৩ মার্চ) পাবনার পাইকারি হাটে বেগুন বিক্রি করতে আসা কৃষকেরা এমনটাই জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
কৃষকরা জানান, এক মাস আগেও পাবনার পূর্বাঞ্চল বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলায় যে বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে সেই বেগুন কৃষকেরা প্রতি কেজি পাইকারি দুই থেকে তিন টাকা দরে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পাবনার বেড়া উপজেলার কৃষক আবুল কাশেম বলেন, ‘জীবনে কুনুদিন দেহি নাই যে লাউ, বেগুনের দাম এত কুমিছে। ইবার দেখতিছি এরকম। বিক্রি করেই বা কিরবো। আবাদের খরচই উঠতিছে না।’
বেগুন চাষি শাহজাহান আলী বলেন, ‘হাটে বেগুন লিয়ে আইসে দেহি ৮০-৯০ টেকা মণ দাম কয় ব্যাপারীরা। সে হিসেবে তো ২ থেকে ৩ টেকা কেজি পড়ে। মিজাজটা কিরম হয় তালি কন। এত কষ্ট কইরে ফসল ফলাইলেম, আর তার দাম এইরম। কি করবো বাধ্য হয়ে বেইচে দিয়ে গেলেম।’
এদিকে সবজির এমন দরপতনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। লাভ তো দূরের কথা। উৎপাদন খরচই উঠছে না কৃষকদের। এই রমজান মাসে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম দামে বেগুন, লাউ বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের।
কৃষকরা জানান, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচ টাকা দরে। এতে উৎপাদন খরচ দূরের কথা। হাটে আনার খরচই উঠছে না।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. রোকনুজ্জামান জানান, একদিকে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে সবজির, অন্যদিকে রোজার কারণে মানুষের চাহিদা কম। তার ওপর সব ধরনের সবজি মানুষ একসঙ্গে খেতেও চাচ্ছেন না। এ কারণে সবজির দাম কমেছে। তবে ঈদের পর সবজির দাম আবার বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
উল্লেখ্য, বেগুন ও লাউ ছাড়াও ৫ থেকে ৬ টাকা কেজি করলা, ২০ টাকা কেজি টমেটো, ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি পটোল, ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। এই দামে সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকদের।