আবারও গুলি ও মর্টার গোলার শব্দে কাঁপছে টেকনাফ
মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দখল করা বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) চৌকি ও ক্যাম্পসহ গ্রামগুলো পুনরুদ্ধার করতে রাখাইনে দফায় দফায় বিমান হামলা, মর্টার শেল ও গুলি চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত ২৭ মার্চ ভোরে এবং এবং বিকেলে মায়ানমার থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার লোকজন। এতে জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গত বুধবার(২৭ মার্চ) টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বায়ান্ন টিভিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইউএনও জানান, মিয়ানমারের রাখাইনে চলা সংঘাতের কারণে এপারের টেকনাফ সীমান্তের কাছে বসবাসরতদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সীমান্তের গ্রামগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত এলে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব। তবে কোন রোহিঙ্গা যেনো বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য সীমান্তে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের টহল জোরদার রয়েছে।
এর আগে গত ২৫ ও ২৬ মার্চ গভীর রাতে টেকনাফ হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপার থেকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। রাতে বিরতি দিয়ে সকালে সীমান্তের ওপার থেকে আবার বিস্ফোরণের শব্দ শুনা যায়। ফলে সীমান্তের কাছে বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক কাটছে না।এছাড়াও ২৭ মার্চ হোয়াইক্যংয়ের ওপারে ধোঁয়া উড়তে দেখেছেন স্থানীয়রা।
মিয়ানমারের গণমাধ্যম বলছে, প্রায় দুই মাস ধরে মায়ানমারের আরাকান অঞ্চলের রাখাইন রাজ্য ঘিরে চলা জান্তাবিরোধী সংঘাত থামছে না। আরাকান আর্মির দখলে থাকা রাখাইনের অধিকাংশ অঞ্চলসহ বিজিপির ক্যাম্প ও চৌকি পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া দেশটির সেনাবাহিনীর চেষ্টা চলছে। সেখানকার সেনাবাহিনী আবার নিয়ন্ত্রণে নিতে সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই সীমান্তবাসী বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আক্তার কামাল জানান, চতুর্দিকে সাগর মাঝখানে দ্বীপ। ঘুম থেকে উঠলে দেখা যায় মায়ানমার। রাখাইনে অভ্যন্তরীণ সংঘাতে এপারে দ্বীপ এলাকা সেন্টমার্টিনে ভেসে আসে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ।
হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, হ্নীলা সীমান্তের ওপারে রাখাইন থেকে দফায় দফায় ছোড়া গোলা ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে সীমান্তে থাকা ঘর-বাড়ি কেঁপে উঠছে। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি আরাকান আর্মির দখল করা বিজিপির চৌকি-ক্যাম্প ও গ্রামসহ মংডুর রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপসহ রাখাইনের আশপাশের এলাকা পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ নিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে দেশটির সেনাবাহিনী।