বড় মনিরের বিরুদ্ধে আবারও ধর্ষণ মামলা
ধর্ষণের অভিযোগে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের বিরুদ্ধে রাজধানীর তুরাগ থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী। ‘৯৯৯’ নম্বর থেকে কল পেয়ে রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকার প্রিয়াংকা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনি’র ফ্ল্যাট থেকে ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তরুণীর মামলা দায়েরের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোঃ শাহজাহান।
ওই ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ২৯ মার্চ রাতে গাড়িতে করে ওই বাড়িতে নিয়ে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করা হয় তার মেয়েকে। এ ঘটনার যথাযথ বিচার দাবি করেছেন তিনি।
পুলিশ জানায়, বড় মনির ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এখনও পলাতক রয়েছেন। ভুক্তভোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে তদন্ত চলছে।
এর আগে এক কিশোরীর করা ধর্ষণের মামলায় গত বছর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনি। গত বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় ওই কিশোরীর করা মামলায় মনি’র স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সম্পত্তি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ হলে মামলার বাদী কিশোরী বিষয়টি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিকে জানান। কিবরিয়া সমস্যা সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর শহরের আদালত পাড়ায় একটি ১০ তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে কিশোরীকে যেতে বলেন।
সেখানে যাওয়ার পর তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে রেখে ‘ধর্ষণ’ করেন বড় মনি। ঘটনা প্রকাশ করলে ‘মেরে ফেলার হুমকি’ দেন। প্রথমবার ‘ধর্ষণের সময় তোলা ছবি দেখিয়ে’ বড় মনি পরে আরও কয়েকবার ‘ধর্ষণ করেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন কিশোরী।
মামলায় তিনি বলেছেন, ধর্ষণের ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
তাতে রাজি না হওয়ায় গত বছরের ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে বড় মনির ওই কিশোরীকে ‘তুলে নিয়ে যান’ এবং একটি কক্ষে তালাবন্ধ করে রেখে আবারও ‘ধর্ষণ’ করেন। তার স্ত্রী নিগার আফতাবও সেখানে ওই কিশোরীকে ‘মারপিট’ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।পরে মেয়েটির একটি সন্তান হয়।
এ বিষয়টিও আদালতে গেলে, আদালত ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। গত ৯ অক্টোবর আপিল বিভাগে দাখিল করা ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয় ধর্ষণের শিকার নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া নবজাতকের বাবা বড় মনির নন। নবজাতকের ডিএনএর সঙ্গে বড় মনিরের ডিএনএ মেলেনি বলে পিবিআই’র দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন পক্ষে থাকায় গত বছরের ৯ অক্টোবর বড় মনিরকে জামিন দেয় আপিল বিভাগ। পরে গত বছরের ১৮ নভেম্বর পুলিশ ওই ধর্ষণ মামলার বাদী কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। ওই মামলাতেই জামিনে থাকা অবস্থায় আবারও একই কাণ্ডে জড়ালেন এ আওয়ামীলীগ নেতা।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত বড় মনি টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব এবং টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই।