মামা-ভাগ্নির অভিনব প্রতারণা, হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা
দিদারুল ইসলাম (৩০) ও তপসী রাবেয়া বসরি (২৮) সম্পর্কে মামা-ভাগ্নি। আর এই দুজন মিলে অভিনব প্রতারণা করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। প্রতারণা করার জন্য দিদারুল সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয় দিতেন আর ভাগ্নি রাবেয়া নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলে দাবি করতেন।
মামা-ভাগ্নির এসব চাঞ্চল্যকর কাহিনী বেরিয়ে আসে সম্প্রতি প্রতারণার এক মামলা দায়েরের পর। কিশোরগঞ্জের এমাদ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) তাদের গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।
অভিযোগকারী এমাদ উদ্দিনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানার বত্রিশ এলাকায়। তিনি স্থানীয় ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ইমাম বলে জানিয়েছে ডিবি।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি বলছে, গ্রেফতার দিদারুল অনার্স পাস। তার ভাগ্নি ও কথিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তপসী দেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তারা মামা-ভাগ্নি মিলে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছেন।
হারুন বলেন, প্রতারক দিদার সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ভুক্তভোগী ইমামের বাসায় যেতেন। এই সময় তার সঙ্গে তপসী রাবেয়া বসরি নামের এক তরুণীকে নিয়ে যেতেন। দিদারের ভাগ্নি রাবেয়া বসরি নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। তারা মূলত বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে জমি কেনার নামে সখ্য গড়ে তুলতেন। সেনাবাহিনীর পোশাক ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করে তারা টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতেন।
ডিবি প্রধান বলেন, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি এবং অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর নামে ধাপে ধাপে প্রায় ৪৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারণা চক্রটি। কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ইমাম আমাদের কাছে এসে অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পরিচয়ে ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া ও মেয়েকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
হারুন জানান, চক্রটি বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরির ক্ষেত্রে প্রথমে এডমিট কার্ড জাল করে। পরে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে এডমিটের রোল নম্বর না মিললে আবারও নতুন করে এডমিট কার্ড বানিয়ে দিতো তারা। ভাইভাতেও একইভাবে জাল এডমিট ও ভুয়া রেজাল্ট শিট তৈরি দিতো।
ডিবি জানায়, সেই ইমাম ছাড়াও কিশোরগঞ্জে এক পুলিশ সদস্যের পরিবারের এক সদস্যকে একইভাবে চাকরি দেওয়ার নামে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই ঘটনায় কিশোরগঞ্জ থানায় একটি মামলা চলমান।