আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ঈদকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে ডাকাতির পরিকল্পনা, গ্রেপ্তার ৯

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল একটি চক্র। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে গাজীপুরের গাছা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১।  

সোমবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

র‍্যাব জানায়, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।  

গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাতরা হলেন, মো. শহিদুল ইসলাম (৩৪), মো. আয়নাল মিয়া ওরফে  আয়নাল হক ওরফে আয়নাল (৩৯), মো. আন্ডু মিয়া (৫৭), মো. আজিজুল ইসলাম ওরফে আইনুল (৩২), উজ্জ্বল চন্দ্র মহন্ত (২৭), মো. শাহিন ওরফে সজিব (৩৩), মো.শহিদ (৩৮), মো. রনি সরকার (২৪) ও মো. আব্দুল হাকিম ওরফে গাটু ওরফে আব্দুল গাটু মিয়া (৪০)। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ওয়ান শুটারগান, ১টি ম্যাগজিন, ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ২টি ওয়ান শুটার গানের গুলি, ২টি ছোরা, ১টি রামদা, ১টি দা, ৫টি গামছা, ১টি রশি, ১টি করাত, ২টি টর্চ লাইট, ১টি বস্তা, ১১টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেপ্তাররা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। এ চক্রের সদস্য সংখ্যা  ১০-১২ জন। এ চক্রের সর্দার শহিদুল ইসলাম। তার অন্যতম সহযোগী আন্ডু মিয়া ও আয়নাল মিয়া যারা ডাকাতির পরিকল্পনা এবং অন্যান্য ডাকাতদের সংঘবদ্ধ করে। তারা গত ৫ বছর ধরে একই সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে রংপুর এবং গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল। প্রথমে তারা চুরি এবং ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বিভিন্ন দফায় জেলে থাকার কারণে গত কয়েক বছর ধরে ডাকাতি পেশায় জড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ডাকাত সরদার শহিদুল ইসলাম আগে সে রিকশা চালাতেন। পরে সে সহজলভ্য এবং বেশি অর্থের লোভে ডাকাতির পেশায় জড়িয়ে পড়ে। তারা সাধারণত প্রতি মাসে ২-৩ বার ৬-৯ জনের দলে সংঘটিত হয়ে প্রথম দিকে রংপুর ও পরবর্তীতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও মহাসড়ক কেন্দ্রিক ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। ডাকাতির কৌশল হিসাবে তারা সড়কসমূহের নির্জন স্থানে রাতের আধারে গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করত। পরে তারা ইজিবাইক, অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটর সাইকেল, ছোট পিকআপসহ ছোট আকারের যানবাহনগুলোকে টার্গেট করে অস্ত্রের মুখে ভিকটিমদের জিম্মি করে ডাকাতি করত।

চক্রটি আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে বড় আকারে ডাকাতি করার জন্য গাজীপুর জেলার গাছা থানাধীন ঝাঁজর এলাকায় সংঘটিত হয়েছিল। শহিদুলের বিরুদ্ধে ডাকাতি, ডাকাতির প্রস্তুতি, ধর্ষণসহ ৬টি মামলা রয়েছে।

এই চক্রের পরামর্শদাতা হিসেবে আন্ডু মিয়া কাজ করতেন উল্লেখ করে র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, আন্ডু মিয়া ডাকাত সর্দারের অন্যতম সহযোগী এবং পরামর্শদাতা। সে ১৯৯৫ সাল থেকে চুরি এবং ডাকাতির চক্রের সাথে জড়িত। এর আগে তার একটি চায়ের দোকান ছিল। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতিসহ ৪টি মামলা রয়েছে।

ডাকাতির পর চক্রদের সদস্যদের জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করতো গ্রেপ্তার মো.শহিদ। গত তিন বছর ধরে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত শহিদ। ডাকাত চক্রে সে ডাকাতির পর পলায়ন পরিকল্পনাকারী এবং পলায়নে সহায়তার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করত। তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা এবং চুরিসহ ১২টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন এছাড়াও ডাকাত চক্রের সদস্য শাহিনের বিরুদ্ধে দস্যুতাসহ ২টি, উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাসহ ২টি, আজিজুলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের ১টি, আব্দুল হাকিম এবং রনি সরকারের বিরুদ্ধে চুরির ১টি করে মামলা রয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন