এ মাসেই উদ্ধার সম্ভব হবে জিম্মি ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে: নৌ প্রতিমন্ত্রী
চলতি মাসেই উদ্ধার করা সম্ভব হবে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে বন্দি ২৩ জন নাবিকসহ জাহাজ 'এমভি আবদুল্লাহ'। এমনটাই আশা করছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। আশা করছি, এ মাসের মধ্যে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে পারবো।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অপহৃত নাবিকদের সুস্থভাবে দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া হচ্ছে আমাদের প্রধান দায়িত্ব। সেই লক্ষ্যে কাজ চলছে। এটা কোনো ছোট ঘটনা না, অনেক বড় ঘটনা। কাজেই দিন তারিখ দিয়ে এটার সমাধান করা সম্ভব না। তবে আমরা বলতে পারি, সম্পূর্ণ ঘটনা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা আশা করছি, আমরা নাবিকদের সুস্থভাবে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে তাদের যেন আনতে পারি। কিন্তু সেই টার্গেটটা পূরণ করতে পারিনি সেটা ব্যর্থ হয়েছে। তবে আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো। আমরা আশা করি এই মাসের মধ্যে একটি সুষ্ঠু সমাধান হয়ে যাবে।'
তিনি আরও বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই জিনিসটার সমাধান করার চেষ্টা করছি। তবে আমাদের নৌবিভাগ আন্তর্জাতিক এলাকায় কাজ করে, তারাও খোঁজ-খবর রাখছেন। সার্বিক বিবেচনায় বলছি, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।’
নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌ-অধিদপ্তরও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কথাবার্তা হচ্ছে। তারা ভালো আছেন। তবে, বিষয়টি অল্প কিছুদিনের মধ্যে সমাধান হবে। এখন দস্যুদের সঙ্গে আচরণটা কীভাবে হয়, এই ধরনের আলোচনা করার জন্য কিছু কিছু সংগঠন আছে, মানুষে আছে, তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে।’
খালিদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা তো কখনো দস্যুদের মোকাবিলা করিনি। কাজেই আমরা বলতে পারবো না, কীভাবে আলোচনা হচ্ছে। যারা দস্যুদের সঙ্গে চলাফেরা করেন, সেই মানুষদের মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। এর আগে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে যখন বাংলার সমৃদ্ধি আটকে গেলো, তখনও এই ধরনের কিছু সাহায্য নিয়ে সমাধান করেছিলাম।’
এর আগে গেলা ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ ন্যাটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দস্যুদের কাছে জিম্মি আছেন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জাহাজটি জলদস্যুর কবলে পড়ে।
এমভি আব্দুল্লাহ দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ। এটি একটি বাল্ক কেরিয়ার। এর দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’।