‘তিলকে তাল নয়, তালগাছের ঝাড় সমেত উপস্থাপন করা হয়েছে’
আমার পরিবার ও আমার নামে অসত্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। তিলকে তাল বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। বলেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘আমার কিছু কথা’ শিরোনামে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে ভিডিও প্রকাশ করেন পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা।
সবাইকে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, আপনারা জানেন যে আমি প্রায় দুই বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এই অবসরকালীন সময়ে আমি নিরিবিলি জীবন কাটাচ্ছি। চাকরিকালীন সময় বিগত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী কর্তৃক অবিরত এবং ক্রমাগত অপপ্রচার এবং ব্যক্তিগত চরিত্রহননের অপচেষ্টার শিকার হয়েছি।
তিনি জানান, সম্প্রতি পত্রিকায় আমি এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কিছু খুবই আপত্তিজনক, মানহানিকর, অসত্য এবং বিকৃত সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই সংবাদের সূত্র ধরে অন্যান্য কতিপয় আউটলেট একই রকমের সংবাদ পুনরাবৃত্তি ক্রমে পরিবেশন করেছে। তবে দেশের মূলধারার প্রিন্ট এবং মিডিয়া এই অসত্য, মানহানিকর এবং বিকৃত সংবাদ পরিবেশনে কোন আগ্রহ দেখায়নি। এজন্য মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি আমি এবং আমার পরিবারের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
সাবেক আইজিপি বলেন, আমার অবসর গ্রহণের প্রায় দুই বছর পরে আকস্মিকভাবে আমার পরিবারের বিরুদ্ধে এই ধরণের একটি সংবাদ কেন পরিবেশন হল আমি সচেতন ভাবেই সেই আলোচনায় যাব না। তবে এর কারণ রাজধানীর সব সাংবাদিক ও সচেতন মহলের মুখে মুখে।
এরপর তিনি নিজের বিভিন্ন অর্জনের কথা জানিয়ে বলেন, যেহেতু আমি পাবলিকের টাকায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছি, প্রায় ৩৫ বছর রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কর্তব্য পালন করেছি, সেহেতু ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার অবস্থান থেকে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে সত্য তুলে ধরার তাগিদ অনুভব করেছি। সেই সঙ্গে এই সংবাদের কারণে যারা ব্যথিত হয়েছেন তাদের প্রতি সম্মান রেখে প্রকৃত সত্য ও তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে তাদেরকে আশ্বস্ত এবং তাদের বিশ্বাসের জায়গাটা সুদৃঢ় করতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা প্রকাশিত দুই কিস্তির সংবাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছি। এতে সব মিলিয়ে ৪৫টি তথ্য, অভিযোগ এবং অপমানজনক বক্তব্য রয়েছে। তার মধ্যে ২৪টি তথ্য বা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কল্পনাপ্রসূত। দুইটি বিষয়কে সাত বার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে এবং দুইটি তথ্যকে ভুল প্রেক্ষাপটে বিকৃতভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। বাকি দশটি তথ্যকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে, শুধু তিলকে তাল নয়, তালগাছের ঝাড় সমেত বানিয়ে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আমার এবং পরিবারের ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের সম্পত্তির তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। বেতন ভাতার হিসাব কাল্পনিক এবং ভুল। গোপালগঞ্জের পারিবারিক কৃষি খামারের ভূমির পরিমাণ যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। জমির সকল তথ্য ট্যাক্স ফাইলে উল্লেখ আছে। এছাড়া আমার পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্রসহ বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যা আমাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সম্প্রতি এক জাতীয় দৈনিকে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।