আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ট্রাকচাপায় ৩ জনের মৃত্যু: ঘাতক চালক গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় ট্রাকচাপায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানসহ তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় চালক রাজু আহমেদ শিপনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

নিহতরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম (৪০), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) ও আড়াই বছরের কন্যা সানজিদা।

সোমবার (১৮ জুলাই) সাভার থেকে রাজু আহমেদ শিপন নামে ওই ট্রাক চালককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিপন জানায়, ট্রাকে অতিরিক্ত ওজনের মালামাল থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। বাবা-মা ও সন্তানকে সে দেখতে পায়নি।  এর আগে সে ১১ জুলাই থেকে একটানা মালামাল পরিবহন করে আসছিলো। এর মধ্যে সে একবার রাজশাহী থেকে আম নিয়ে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে যায়। সেখানে মালামাল আনলোড করে পুনরায় রাজশাহী ফিরে আসে। এরপর গত ১৫ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট হতে গাড়ির মালিকের আম বোঝাই করে এবং পরবর্তীতে রাজশাহীর নৌহাটা থেকে আরেক দফায় আলু বোঝাই করে কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের উদ্দেশে রাত ১২টায় রওয়ানা করে।

পথে সামান্য বিরতি নিয়ে আবারও একটানা গাড়ি চালাতে থাকে শিপন। বেলা সোয়া ৩টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছালে রাস্তা পারাপারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা নিহত জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী-সন্তানকে চাপা দেয় ট্রাকটি।

দুর্ঘটনার পর লোকজন ট্রাকটি আটক করে। এ সময় চালক শিপন ঢাকাগামী একটি বাসে উঠে পড়ে। তারপর অপর একটি বাসে করে সে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌঁছায়। সেখান থেকে সে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থাকে। গতকাল তার পরিচিত একটি ট্রাকে করে সে ঢাকার সাভারে পৌঁছায়। সেখান থেকে রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 গেলো শনিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম মেয়ে সানজিদাকে (৬) সঙ্গে নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্নার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে যান।এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগতির একটি ট্রাক ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিলো। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাকটি তাদের চাপা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম, রত্না বেগম ও মেয়ে সানজিদা আক্তার নিহত হন। এ সময় রত্না বেগমের পেট ফেটে শিশুটির জন্ম হয়। পরে আহত শিশু সানজিদা ও নবজাতককে উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করেন। নবজাতককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু রোববার রাতেই ত্রিশাল থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলাতেই চালক শিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রত্নার রেখে যাওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছেন তার দাদা ও দাদি। কিন্তু সেজন্য তারা সরকার ও বিত্তবানদের সহায়তা চেয়েছেন।

মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু ও তার স্ত্রী সুফিয়া আক্তার দুইজনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের আরেক ছেলে ২০০৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

মেহা

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন