কথা রাখেনি ডেসকো!
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ছিল পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের প্রথমদিন। এই প্রথমদিনেই হতাশ হলো দেশবাসী। কথা রাখতে পারলো না বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো।
জ্বালানি সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও রাজধানীর কোনো কোনো এলাকায় বার বার বিদ্যুৎ গিয়েছে আর এসেছে। ঢাকায় কোথাও কোথাও দুই থেকে তিন ঘণ্টা, আর ঢাকার বাইরে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে।
দেশের ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাজধানীর দুটি বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকো গতকাল দিনে সর্বোচ্চ ৩০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ ঘাটতি পেয়েছে। কোনো এলাকায় এক ঘণ্টা দিলেও অন্য এলাকায় একটু বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে তাদের। ফিডার (একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের আওতাধীন এলাকা) ধরে লোডশেডিংয়ের রুটিন করা হলেও তা মানতে পারছে না ডিপিডিসি ও ডেসকো।
ঢাকার মিরপুর এলাকায় রুটিন অনুসারে লোডশেডিং হওয়ার কথা ছিল রাত আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত । অথচ ভোর ছয়টা থেকে সকাল সাতটা, বেলা সোয়া দুইটা থেকে সাড়ে তিনটা ও সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা থেকে রাত আটটা—তিনবার লোডশেডিং হয়েছে এ এলাকায়। শুধু মিরপুর নয় ঢাকার অন্যান্য এলাকাতেও ঘটেছে একই ঘটনা।
তবে ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরেই লোডশেডিংয়ের রুটিন না মানার ঘটনা বেশি ঘটছে। রংপুরে এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের পর বিদ্যুৎ এলেও আবার আধা ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গতকাল শহরের মুন্সিপাড়া ফিডারের আওতাধীন প্রায় ১২টি এলাকায় বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত লোডশেডিং হওয়ার কথা ছিল। তবে সকাল থেকেই ওই এলাকাগুলোতে কয়েক দফা লোডশেডিং হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের কাছারি বাজার ও এর আশপাশের এলাকায় চারবার লোডশেডিং হয়েছে।
নওগাঁ পল্লী সমিতি-১ ও সমিতি-২-এর অধীনে জেলার অধিকাংশ এলাকায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে গতকাল।
পিডিবি জানিয়েছে, গরমে বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন বাড়ছে। এর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ সাশ্রয়ে ১ হাজার ২৯০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১০টি ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব কটি বন্ধ রাখা হয়েছে। খোলাবাজার থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিও বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি। ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের চাহিদার চেয়ে কম সরবরাহ পাচ্ছে।
সরকারিভাবে বলা হয়েছে, এক ঘণ্টায় কাজ না হলে এক সপ্তাহ পর দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) থেকে বলা হয়েছে, পরিকল্পিত লোডশেডিং বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতার ঘাটতি আছে। প্রতিশ্রুতি অনুসারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারলে বিতরণ কোম্পানিগুলো রুটিন মেনে লোডশেডিং দিতে পারবে না। এতে প্রান্তিক মানুষকেই পড়তে হবে বেশি ভোগান্তিতে।
এসি