ফিলিস্তিনে ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পালালেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচালেন ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ওলিভার ওকজা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) পশ্চিম তীরের ‘ফিলিস্তিন জাদুঘর’ পরিদর্শনে গিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত এই পরিস্থিতির সম্মুখিন হন। তাঁর এই ধাওয়া খাওয়ার ভিডিওটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মঙ্গলবার ফিলিস্তিন জাদুঘর পরিদর্শনের সময় জনরোষে পড়েন তিনি। এরপরই জার্মান রাষ্ট্রদূত প্রাণভয়ে দৌড়াচ্ছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন বিক্ষুব্ধ যুবক তার পেছনে ছুটছেন।
একপর্যায়ে দৌড়ে নিজের গাড়িতে আশ্রয় নেন জার্মান দূত। গাড়িতে ওঠার পর তার গাড়িকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। ওই সময় ‘গুলির শব্দও’ শোনা যায়।
ইসরায়েলের বহুল প্রচারিত গণমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়েছে, রামাল্লা থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে পশ্চিম তীরের বিরজেইট বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত ফিলিস্তিন যাদুঘর পরিদর্শন করছিলেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী কূটনীতিক ওলিভার ওকজাকে উদ্দেশ্যকে করে ‘গেট আউট’ বলে চিৎকার করছিলেন। একপর্যায়ে তারা জার্মান কূটনীতিককে তাঁর গাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য করে। চলে যাওয়ার সময়ও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তার গাড়িটির পেছনে পেছনে দৌঁড়াতে থাকে এবং ঢিল ছুড়তে থাকে।
এদিকে, এ ঘটনার পর রাষ্ট্রদূত ওলিভার ওকজা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন। এতে তিনি লিখেছেন,‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও সংলাপের জায়গা সব সময় থাকে। তবে বিরজেতের জাতীয় জাদুঘরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশনপ্রধানদের বৈঠকটি প্রতিবাদকারীদের জন্য বাধাগ্রস্ত হওয়ায় আমরা দুঃখিত।তবুও, আমরা আমাদের ফিলিস্তিনি অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলক কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গত ৭ অক্টো্বর ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এ হামলার প্রতিশোধ নিতে ওইদিনই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সহানুভূতি জানাতে তেলআবিবে ছুটে আসেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ।এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আনা গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের এই দেশটি। এসব কারণে জার্মানির ওপর তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ জন্মায় ফিলিস্তিনিদের। এই ঘৃণা ও ক্ষোভ থেকেই জার্মান রাষ্ট্রদূতকে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।