বিএনপি

‘দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে মীরজাফর হিসেবে চিনবে’

কিয়ামত পর্যন্ত তো আর আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। আপনাদের যখন বিদায় হবে তখন যে ইতিহাস লেখা হবে সেই ইতিহাসে দেশের জনগণ আপনাদেরকে মীরজাফর হিসেবে চিনবে। মীরজাফর যেমন নিগৃহীত হয়েছে আপনারা তেমন হবেন। আর বর্তমানে যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে আগামী প্রজন্ম বলবে এরাই দেশকে রক্ষা করেছে। ভারতের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করেছে। এদেরকে স্বাধীনতা রক্ষাকারী হিসেবে চিনবে। বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে সারাদেশে চলমান তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ নগরীর পথচারীদের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের তুরাগ থানা বিএনপির পক্ষ থেকে খাবার পানি, স্যালাইন বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, তীব্র গরমে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এই আবহাওয়ার কারণ আমরা শুধু প্রকৃতিকে দোষ দিতে পারি না। এই দোষ মানুষের আছে। প্রকৃতিকে প্রতিনিয়ত লুটেরা ভূমিদস্যুরা ধ্বংস করছে। এরা সবাই সরকারি দলের লোক। তারা প্রকৃতিকে ধ্বংস কর‌ছে এবং বিরোধী দলকে দমন করার পাশাপাশি ব্যবসা জমিজমা দখল করে নিয়েছে সরকারি দলের লোকজন। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা দিচ্ছে, গুম খুন করছে, বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করছে আওয়ামী লীগের লোকজন। তারা (বিএনপির নেতাকর্মীরা) অনেকেই ঢাকায় এসে রিকশা চালায়। এদের অনেকেই দেখবেন বিএ পাস এমএ পাস করেছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ, তারা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা বিদেশে পাড়ি দিবে কেন? বিদেশে পাড়ি দেওয়ার যে ভাড়া সেটাইতো তাদের পকেটে নাই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মেট্রোরেলের টাকা, বিভিন্ন ঠিকাদারি টাকা, পদ্মা সেতুর টাকা, কয়লা পুড়িয়ে যে তাপকেন্দ্র করেছেন সেই টাকা, এই টাকাগুলো রাখবেন কোথায়? এ টাকাগুলো লুকানোর জন্য ক্ষমতাসীন লোকেরাই তো বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন ও তাদের ব্যবসায়ীরা কত টাকা লুটপাট করেছে এটা সাংবাদিকরা যাতে না জানে এইজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সাংবাদিকরা যাতে সেখানে যেতে না পারে। কারণ আওয়ামী লীগের লোকজন ও তাদের ব্যবসায়ীরা কোন ব্যাংক থেকে কত টাকা লুটপাট করেছে এর তথ্য হয়তো বাংলা‌দেশ ব‌্যাং‌কে আছে। এই তথ্য সাংবাদিকরা যাতে জানতে না পারে এই জন্য তাদের ওপর বিধিনিষেধ দিয়েছে।

রিজভী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকদের সব জায়গায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের যাওয়া নিষেধ করেছে তাহলে বুঝতে হবে শেখ হাসিনা কাদের সরকার। শেখ হাসিনা লুটপাটকারীদের সরকার, বাজার সিন্ডিকেটকারীদের সরকার, ব্যাংক ডাকাতদের সরকার। যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করে বিদেশে পাচার করেছে সেই বড় ঋণ খেলাপিদের প্রতিনিধি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। যারা কৃষক তাদের ৫০০০ টাকা ঋণ মওকুফ হয় না আর যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে তাদের সুদ মওকুফ হয় এবং আসল টাকা বিদেশে পাচার করে।

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, বিএনপির লোকজন বিদেশে যাবে কেন? তারা জেলে যাচ্ছে। তাদেরকে নির্যাতন করা হচ্ছে। পায়ের নখ তুলে ফেলা হচ্ছে। তারপরও তারা এদেশে থেকে গণতন্ত্রের জন্য অদম্য সাহস নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনের প্রেরণা হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বিদেশে চলে যেতে পারতেন। কিন্তু জনগণকে ছেড়ে তিনি বিদেশে যাননি। আমরা বুঝতে পেরেছি, শেখ হাসিনা জোর করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করবেন, তারপরও তিনি জনগণের জন্য দেশের বাইরে যাননি।”

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ড তো আপনার নেত্রীর। ওয়ান ইলেভেনের সময় কে আমেরিকায় পালিয়ে গিয়েছিল?

রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অনেক রাজনৈতিক দল আমাকে উচ্ছেদ করতে চায়। আপনাকে উচ্ছেদ করে কাকে বসাবে? আপনাকে উচ্ছেদ করে কাউকে বসানো এটা কোনো রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নয়। এই দায়িত্ব দেশের জনগণের। আপনি দেশের জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিন তাদের যাকে ইচ্ছা ক্ষমতায় বসাবে। আপনার বক্তব্যে প্রমাণিত হয় আপনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি সব হয়েছে ডামি নির্বাচন, ভোট ডাকাতের নির্বাচন।

আমরা জানি আমাদেরকে আবার জেলে নিয়ে যাওয়া হবে নির্যাতন করা হবে তারপরও আমাদের আন্দোলন থামবে না, বলেন রুহুল কবির রিজভী।

এএম/

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন