আচারেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ!
বাঙালির খাবারের পাতে একটু আচার না হলে চলে না। তবে জায়গা অনুযায়ী আচারের উপকরণ বা ধরন বদলে যেতে পারে। পাল্টে যেতে পারে তার স্বাদও। কিন্তু আচারের পুষ্টিগুণ কম-বেশি একই থাকে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, শুধু স্বাদ নয়, রোজ পরিমিত পরিমাণে আচার খেলে শরীরের অনেক উপকারও হয়।
সব্জি, ফল কিংবা মাংসের সঙ্গে বিভিন্ন রকম মশলা, তেল, ভিনিগার দিয়ে মজিয়ে তৈরি করা হয় আচার। তবে, শুধু এ দেশে নয়, পাতে আচার নেয়ার চল বিদেশেও রয়েছে। উত্তর আমেরিকায় যেমন স্যান্ডউইচ, বার্গারের সঙ্গে শসার আচার খাওয়ার চল রয়েছে। বিভিন্ন ভেষজের সঙ্গে ভিনিগার এবং শসা মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই আচার। আবার ইউরোপে বাঁধাকপি দিয়ে তৈরি আচার খাওয়ার চল রয়েছে। স্যান্ডউইচ এবং গ্রিল্ড মুরগির সঙ্গে গাজর, ওলকপি, শসা, রসুন, লঙ্কা এবং বিভিন্ন ধরনের ভেষজ দিয়ে তৈরি আচার খাওয়ার চল রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। অন্য দিকে জাপান, কোরিয়ার মতো দেশে আচার, কিমচি কিন্তু রোজের ডায়েটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রোজ পরিমিত পরিমাণ আচার খেলে অন্ত্রের এবং গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল স্বাস্থ্য ভাল থাকে। যেহেতু এই ধরনের খাবারে প্রোবায়োটিক ব্যাক্টেরিয়া রয়েছে, তাই অন্ত্রের মধ্যে ভাল এবং খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এই খাবার। আবার, এমন অনেক আচার রয়েছে, যার মধ্যে ব্যবহার করা হয় ভিনিগার। তা নিয়েও বেশ কিছু গবেষণা রয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এই ভিনিগার রক্তে ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা সঠিক ভাবে পরিচালনা করতেও সাহায্য করে। আচার খেলে যে উপকারগুলো হয়- যে কোনও মজানো খাবারের মধ্যেই প্রোবায়োটিক রয়েছে। আচারও সেই গোত্রের একটি খাবার। আচারের মধ্যে থাকা ভাল ব্যাক্টেরিয়াগুলি অন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি হজম সংক্রান্ত সমস্যাও নিয়ন্ত্রণ করে।
আচারে ক্যালোরির পরিমাণ কম। কিন্তু সহজপাচ্য ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই আচার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। হজম সংক্রান্ত সমস্যা বশে রাখতে সাহায্য করে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার।
অন্যান্য খাবার থেকে পুষ্টি শোষণ করতেও সাহায্য করে আচার। ভিটামিন কে, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর এই খাবার শারীরবৃত্তীয় কাজেও সাহায্য করে। দোকান থেকে কেনা আচার কি শরীরের পক্ষে ভাল? এককথায় খারাপ তা বলা যায় না। আবার একেবারে নিরাপদও বলা উচিত নয়। দোকান থেকে কেনা আচারের মধ্যে অত্যধিক নুন এবং রাসায়নিক থাকতেই পারে। এই ধরনের আচার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু বাড়িতে তৈরি আচার খেলে এই ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব।