দেশজুড়ে

জিনের বাদশা চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

জিনের বাদশা চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৬টি সোনালি রঙের মূর্তি উদ্ধার করা হয়। শনিবার (১১ মে) ভোরে তাদেরকে সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ঠাকুগাঁও জেলার জগন্নাথপুর বানিয়াপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. শফিউল আলম ও তার স্ত্রী মোছা. ফাতেমা খাতুন, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার টেরীপাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেন, পাবনা আমিনপুর থানার সৈয়দপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের সাহেব আলী শেখের ছেলে মজিবর রহমান ও বন্দের আলী সরদারের ছেলে আকাশ সরদার।

শনিবার (১১ মে) বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়গঞ্জ সার্কেল বিনয় কুমার ও সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সলঙ্গা থানা পুলিশের একটি আভিযানিক দল হাটিকুমরুল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছিল।

এ সময় উত্তরবঙ্গ থেকে আসা একটি বাসে ৫ জন যাত্রীবেশী প্রতারক হাটিকুমরুল গোলচত্বরে নেমে পাবনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিএনজিতে ওঠে। সে সময় তাদের কাছে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ৬টি সোনালি রঙের মূর্তি ও বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধ উদ্ধারসহ তাদের গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আসামিরা জিনের বাদশা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা গ্রামগঞ্জের সহজ সর‌ল লোকদের গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে থাকে।

অনুমানিক ১০ দিন পূর্বে প্রতারক চক্রের সদস্যরা পাবনার আমিনপুর থানার ভাটিকয়া গ্রামে মো. রেজাউল হকের বাড়ির পাশে মাটির নিচ থেকে একটি পিতলের পাতিল উদ্ধার করে তাতে স্বর্ণ মুদ্রা রয়েছে উল্লেখ করে রেজাউলের বাবার হাতে দেয়। কিন্তু পূর্ব থেকেই পাতিলে রাসায়নিক পদার্থ থাকায় উত্তপ্ত পাতিল হাতে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেজাউলের বাবার হাত পুড়ে যায়। সেই সময় প্রতারক চক্রের সদস্যারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জানায় যে, গুপ্তধন এখনো কাঁচা রয়েছে, জাদু মন্ত্র দিয়ে পাকা করতে হবে। প্রতারকরা রেজাউল ইসলামকে পাতিলটিতে পানি দিয়ে ঠান্ডা করে পুঁতে রাখতে বলে। পাকা করার পর গুপ্তধন ব্যবহার উপযোগী হবে।

এছাড়া প্রতারকরা আরও জানায় যে, তাদের বাড়িতে আরও গুপ্তধন রয়েছে, এগুলো জিনের মাধ্যমে উদ্ধার করতে হবে। গুপ্তধনে ১৮টি স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে যার অনুমানিক মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। আপনারা যদি আমাকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে দেন তাহলে আমি উদ্ধার করে দিব। কিন্তু সহজ সরল রেজাউল ইসলাম প্রতারকদের প্রতারণা বুঝতে না পেরে তাদের নগদ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে কথিত গুপ্তধনের পাতিলটি নিজেদের কাছে রাখে এবং ১০ দিন পরে ওই কাঁচা গুপ্ত ধন পাকা করাসহ আরও গুপ্তধন উদ্ধারের জন্য ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে আসতে বলে।

প্রতারক চক্র সেদিন রেজাউলের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। পরবর্তী আরও বাকি ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার জন্য ১১ মে প্রতারণার উদ্দেশ্যে পাবনা আমিনপুর যাওয়ার পথে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ব্যাপারে সলঙ্গা থানায় প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন