অর্থনীতি

দেশের আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ৯২৫ কোটি ডলার

দেশের  বৈদেশিক লেনদেনের আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ঘাটতি হয়েছে ৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন বা  ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। গেলো অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ ঘাটতি ছিল ৮ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। তবে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে এবং চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে।

গেলো সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের  ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ের ব্যালান্স অব পেমেন্ট বা বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের হিসাবে এ তথ্য জানা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে আমদানি ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ কমে ৪৫ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। একই সময়ে রপ্তানি ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে ৪০ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। এতে বাণিজ্য ঘাটতি কমে এখন ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়নে নেমেছে। গেলো অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ১৪ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার।

যদিও সংশ্লিষ্টদের দাবি, কাগজে-কলমে আমদানি কমলেও প্রকৃতপক্ষে কতটা কমেছে– তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ডলার সংকটের এ সময়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে অনেকে এলসি ছাড়াই কিংবা আন্ডার ইনভয়েসিং বা দর কম দেখিয়ে পণ্য আনছেন। এক পণ্যের এলসি খুলে আরেক পণ্য আনার ঘটনাও রয়েছে। এসব অর্থ পরিশোধ হচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে। ফলে হুন্ডি চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে প্রবাসে শ্রমিক যাওয়া অনেক বাড়লেও সেভাবে রেমিট্যান্স বাড়েনি।

জানা যায়, দেশে আন্তর্জাতিক সম্পদের মালিকানা হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়টি পরিমাপ করা হয় আর্থিক হিসাবের মাধ্যমে। সাধারণত এই হিসাবে ঘাটতি তৈরি হলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তথা মজুত ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ওপর চাপ বৃদ্ধি পায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, রপ্তানিকৃত  পণ্যের আয় কেন সময়মতো আসছে না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।একই সঙ্গে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের মধ্যে যে ফারাক রয়েছে, তা–ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটা শেষ হলেই কিছুটা বিভ্রান্তি দূর হবে।

প্রসঙ্গত, বিদেশি ঋণছাড় কমে যাওয়া, সরকারের বিদেশি ঋণ পরিশোধ বৃদ্ধি পাওয়া, কাঙ্ক্ষিত হারে বিনিয়োগ না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বাড়ছে। আবার যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, তার বিপরীতে সব আয় সময়মতো দেশে আসছে না। রপ্তানি আয় সময়মতো দেশে না আসাকেও আর্থিক হিসাবে ঘাটতির বড় একটি কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন