আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

অফিস পদোন্নতিতে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ

অফিস থেকে আপনাকে দেয়া নির্ধারিত কাজ সময়ের আগেই শেষ করছেন, অফিসের নির্দিষ্ট সময়ের পরও নিয়মিত কাজ করছেন, সহকর্মীদের সঙ্গেও সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন। তবুও বছরের শেষে বেতনের গতি সেই একই। ওদিকে অন্য সহকর্মীরা প্রমোশনের সিঁড়ি বেয়ে চলেছেন তড়তড়িয়ে। ভেবে পাচ্ছেন না আপনার ক্ষেত্রে ভুলটা হচ্ছে কোথায়!

বিশ্বাস করুন বা না করুন, অফিসে আপনি কী করছেন বা কী বলছেন তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কীভাবে সেটা উপস্থাপন করছেন। মুখ ফুটে যেটুকু বলছেন, সেটা ছাড়াও নিজের অজান্তেই অনেক না-বলা বার্তা দিয়ে চলছেন সর্বক্ষণ। আর সেটা  নিজের শরীরী ভাষায়। সহজে যাকে বলে ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েস’। 

মিটিংয়ে কুঁজো হয়ে বসা, কথা বলতে বলতে অতিরিক্ত হাত-পা নাড়ানো বা সবসময় ভুরু কুঁচকে থাকার মতো ছোটখাট ‘ভুল’ অনেকেই প্রায়ই করে থাকেন। খুব সাধারণ এ অভ্যেসগুলোই কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে আপনার পক্ষে ভালো মনোভাব তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই নিজের বডি ল্যাঙ্গুয়েস সম্পর্কে সচেতন হন। কিছু বডি ল্যাঙ্গুয়েস আছে যেগুলো অফিসে কিংবা কাজের জায়গাটিতে বদলে ফেলাই ভাল।

নিজের সিটে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর বোর্ড মিটিংয়ে গিয়ে এনার্জি তলানিতে ঠেকতেই পারে, তাই বলে মিটিং কুঁজো হয়ে বসবেন না। এতে অন্যরা বুঝবে, আপনি ওই বিষয়ে একেবারেই আগ্রহী নন বা  কাজের ব্যাপারে চরম উদাসীন। তাই মিটিং বা কোনও গ্রুপে একসঙ্গে কাজের সময় সচেতন থাকুন। চেয়ারে যতটা সম্ভব ঢুকে বসুন, এতে পিঠ সোজা থাকবে।

কথা বলতে বলতে অনবরত চুলে হাত দেয়া, পা নাচানো বা পেন দিয়ে আঁকিবুঁকি কাটা, এককথায় বলতে গেলে ব্যাড ম্যানার্স। ফলে সামনের মানুষটি ভাবতেই পারেন আপনি তার কথায় মনোযোগ দিচ্ছেন না। কেউ কথা বললে চেষ্টা করুন সবসময় তার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে। এতে আর কিছু হোক বা না হোক, সচেতন শ্রোতা হিসেবে আপনার সুনাম বাড়বে।

কথা বলার সময় ভুরু কুঁচকে তাকানো বা মুখ খুব গম্ভীর রাখা থেকে বিরত থাকুন। নতুবা আপনার ব্যাপারে সহকর্মীদের মনে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। তারা আপনাকে রাগী, বদমেজাজী কিংবা অহংকারী ভাবতেই পারেন। কথা বলা বা শোনার সময় মুখের ভাব ভঙ্গিমা যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন। যখন একা থাকবেন এ অভ্যেসটা নিজের মধ্যে আয়ত্ত করার চেষ্টা করবেন।

কথা বলার সময় বা শোনার সময় বুকের কাছে হাত ভাজ করে রাখার অভ্যাসও পাল্টে ফেলতে হবে। সহজ ভাষায় এগুলোকে বলা হয় ‘ক্লোজড কিউস’, মানে বক্তার সামনে একপ্রকার বাধা তৈরি করে দেয়া। এর ফলে সামনের মানুষটি কথা বলার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। বরং কথা বলার সময় হাত জড়ো করে সামনের টেবিলে রাখতে পারেন। এসময় এক পা’র উপর আরেক পা উঠিয়ে না বসাও ভাল।

অফিসে কোনও ড্রেস কোড নেই। তাই ছেড়া জিনস, কুঁচকে যাওয়া কুর্তা কিংবা প্লিটলেস শাড়ি পরে চলে গেলে নিজের বিপদটা নিজেই ডেকে আনবেন। ড্রেস কোডের এই অলিখিত নিয়মটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন, ততই ভাল। কোনও নির্দিষ্ট ড্রেস কোড না থাকলেও অফিসে একটু প্রেজেন্টেবল থাকার চেষ্টা করুন। খোলামেলা বা টাইট পোশাক, ক্যাজুয়াল আউটফিটস পরার সুযোগ প্রচুর পাবেন। একান্তই ইচ্ছে হলে সপ্তাহে একদিন ‘ক্যাজুয়াল ডে’ পালন করতেই পারেন।

এ অভ্যেসগুলো যত তাড়াতাড়ি বদলে ফেলতে পারবেন অফিসে উন্নতির সম্ভাবনা ততই বাড়বে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন