দেশজুড়ে

বিদ্যালয়ের এক রুমে গিয়ে একে একে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ

বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে গিয়ে একে একে ৩৫ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে কেউ জ্ঞান হারিয়েছেন, আবার কেউ কেউ করছেন অস্বাভাবিক আচরণ। এ ঘটনার পরে বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গেলো মঙ্গলবার (১৪ মে) উপজেলার ওই স্কুলের স্কুলের নন্দিনী হাইজিন কর্নারে প্রবেশ করার পর ছাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পরার ঘটনা শুরু হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন হোসনাবাদ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নান্না মিয়া।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, শুরুতে ৮ জন ছাত্রী রুমে ঢুকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁরা অভিভাবকদের স্কুলে অসুস্থ ছাত্রীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। কিন্তু গেলো ১৫ মে একই হাইজিন কক্ষে প্রবেশ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন আরও ২৫ জন ছাত্রী। এদের মধ্যে অসুস্থ ছাত্রীদের সেবা শুশ্রূষা করতে তাদের সংস্পর্শে গিয়েও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকেই।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম জানান,  প্রতিটি বিদ্যালয়েই এ ধরনের হাইজিন রুম থাকে। যতদিন ধরে  স্কুলে মেয়েদের জন্য এ রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে এর মধ্যে আর কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার প্রথম দিন ওই রুমে প্রবেশের পর অসুস্থ হয়ে পড়া মেয়েদের চিৎকার শুনে তাঁরা সেখানে গিয়ে দেখেন একেকজন একেকরকমের কথা বলেছে। কেউ বলেছে দেয়ালে লাল দাগ দেখা গেছে আবার কেউ বলছে কালো বিড়াল দেখা গেছে। পরে অসুস্থ মেয়েদের শিক্ষকদের রুমে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে অভিভাবকদের খবর দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. মাহবুবুর হোসেন জানান, ভৌতিক কিংবা অশরীরী উপদ্রবের কোনো কারণে স্কুলের ছাত্রীরা আক্রান্ত হয়নি। ম্যাস হিস্টিরিয়া বা গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে তারা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এটি তেমন কোনো জটিল কিছু না। চিকিৎসার পাশাপাশি আক্রান্তদের কাউন্সেলিং করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি জানার পরেই তাঁরা স্কুলের সাথে যোগাযোগ করেছেন। যে মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাদের চিকিৎসা ও যে ধরনের ভয়ভীতি রয়েছে তা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিভাবক ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে  দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে।

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন