ইরানি প্রেসিডেন্টের ভাগ্যে কী ঘটেছে? বাড়ছে গুজবের ডালপালা
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি। তাঁর বিষয়ে প্রেসিডেন্টের দপ্তর কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানানোর কারণে প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসিকে ঘিরে দুশ্চিন্তার ডালপালা বাড়ছে। সরকার স্পষ্টভাবে কোনো তথ্য জানাতে না পারায় খোদ ইরানে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে-প্রেসিডেন্ট রাইসি হয়তোবা আর বেঁচে নেই।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার প্রতিবেদন অনুযায়ি, প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজেন এর একটি বাঁধের উদ্ধোধন শেষে ফেরার পথে তার হেলিকপ্টারটি জরুরিভিত্তিতে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ করে।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ বলা হচ্ছে। হেলিকপ্টারটির কী অবস্থা তা পরিষ্কারভাবে বলা হয়নি। আর ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে তাও স্পষ্ট নয়।
ওই বাঁধ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্ট রাইসির সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, তাবরিজ জুমার নামাজের খতিব হোজ্জাতোলেস্লাম আল হাশেমসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরও জানায়, এই বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। যার মধ্যে দুটি নিরাপদে ফিরেছে। ইরানের জ্বালানিমন্ত্রী আলী আকবর মেহরাবিয়ান এবং আবাসন ও পরিবহণমন্ত্রী মেহেরদাদ বাজারপাস অন্য কর্মকর্তারা ওই দুই হেলিকপ্টারে ছিলেন।
তবে দুর্ঘটনার কবলে পড়া হেলিকপ্টারে রাইসি ছিলেন কিনা তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। একটি সূত্র বলছে, রাইসি ওই সময় গাড়িতে ছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে স্থানীয় কয়েকটি সূত্র তার হেলিকপ্টারে থাকার বিষয়টিতে জোর দেয়। বিবিসি, রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যগুলো ওই হেলিকপ্টারে রাইসির থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দুর্ঘটনাকবলিত হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন নিয়েও দুই রকম তথ্য পাওয়া গেছে। ইসরায়েলের প্রভাবশারী গণমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল বোলছে-হেলিকপ্টারটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে সেটি স্থাপন হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
তবে ইরানের তাসনিম নিউজের প্রতিবেদন বোলছে, দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোনকল করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট রাইসির সন্ধান অভিযানে অন্তত ৪০টি অনুসন্ধান দল মোতায়েন করা হয়েছে। এতে আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে, কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া এবং এলাকার দুর্গমতা অনুসন্ধান অভিযানকে কঠিন করে তুলেছে। এমতাবস্থায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলের দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগতে পারে। এমনটাই জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে, মাশহাদ শহরে লোকজন জড়ো হয়ে ইবরাহিম রাইসির জন্য প্রার্থনা করছেন। প্রেসিডেন্ট রাইসির দুর্ঘটনার কবলে পড়ার বিষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। পাশাপাশি টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড।
বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, দলগুলো হেলিকপ্টারে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। হতে পারে দুর্ঘটনাটি খুব খারাপ ছিল। অথবা এলাকাটিতে নেটওয়ার্ক নাও থাকতে পারে। তাই প্রেসিডেন্ট রাইসির ভাগ্যে কী ঘটেছে তা নিয়ে গুজবের ডালপালা ক্রমশ বাড়ছে।
এমআর//