আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রেজাউলের, পথের কাঁটা ভেবে স্ত্রীকে খুন

২০১৯ সালে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়। এরপর প্রেম। তারপর পরিবারকে না জানিয়ে ২০২০ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেন তারা। কিন্তু স্বামী রেজাউলের একাধিক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক থাকার জেরে মনোমালিন্য ও বাগবিতণ্ডা হয়। ঠিক এ কারণেই স্ত্রীকে পথের কাঁটা ভেবে সরিয়ে দিতে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন রেজাউল। জানালেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

আজ শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে  এসব কথা বলেন তিনি।

খন্দকার আল মঈন বলেন, রেজার একাধিক নারীর সঙ্গে প্রেম ছিল। তা স্ত্রী জেনে যাওয়ায় মনোমালিন্য ও বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। বৈবাহিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে জান্নাতুল নাঈম স্বামী রেজাকে কাউন্সেলিং ও আলাপচারিতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

তিনি বলেন, স্ত্রীকে চিরজীবনের জন্য সরিয়ে দিতে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন রেজা। পরিকল্পনা অনুযায়ী বেশ কয়েকদিন ধরেই স্ত্রীকে হত্যার জন্য কাঁধের ব্যাগে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরছিলেন। গেলো ১০ আগস্ট চিকিৎসক স্ত্রী জান্নাতুল নাঈমকে জন্মদিন উদযাপনের কথা বলে পান্থপথের ওই আবাসিক হোটেল নিয়ে যান। সেখানেও তাদের বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা কাটাকাটি, বাগবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর গোসল করে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চট্টগ্রাম চলে যান রেজাউল।

খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামক আবাসিক হোটেল থেকে নারী চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও জখমের চিহ্ন ছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১০।

তিনি বলেন, গেলো রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব- ২ এবং র‌্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকা থেকে আসামি রেজাউল করিম রেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডের সময় রেজার পরিহিত রক্তমাখা গেঞ্জি, মোবাইল ও ব্যবহৃত ব্যাগ এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজা হত্যায় নিজের সংশ্লিষ্টতার দায় স্বীকার করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন