আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেহেশতের উক্তি ‘জনগণের সাথে তামাশা’ : মির্জা ফখরুল

দেশের মানুষের যখন প্রতিমুহূর্তে ভোগান্তি হচ্ছে, কষ্ট করছে এবং তারা হিমশিম খাচ্ছে, জীবন দুর্বিসহ হচ্ছে সেই সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেহেশতে যাওয়ার কথা বললেন, যে বেহেশতে আছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এহেন উক্তি ‘জনণের সাথে তামাশা’। বললেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি দূঃখিত ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বলছি। ইদানিংকালে উনার(পররাষ্ট্রমন্ত্রী) যে চেহারা, সেই চেহারার মধ্যে যেটা ফুটে উঠেছেন যে, স্ফিত হয়েছেন এবং বেশির ভাগ মন্ত্রীদের যেটা হয়েছে যে, সকলেরই আমাদের দেশি ভাষায় বলি, সরি যে একটা হালকা কথা বলব, ‘চিটনাই বেড়ে গেছে’। তার কারণটা হচ্ছে প্রচুর লুটপাট হচ্ছে। সেই লুটপাটের কারণে তারা জনগণের সঙ্গে পরিহাস, তামাশা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, মন্ত্রী মহোদয় এর আগেও এমন এমন সব উক্তি করেছেন যে উক্তিগুলোতে দেশের মানুষ কিছুটা হাস্যকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে উনার এরকম পরিহাস করার কোনো অধিকার নেই।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন সংক্রান্ত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় আমরা সুখে আাছি, বেহেশতে আছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার গেলো দেড় দশক ধরে উন্নয়নের যে ঢোল বাজিয়ে আসছে তন্মধ্যে একটি বড় অংশ জুড়ে ছিল বিদ্যুৎ খাত। দাবি করা হচ্ছে যে ২০২২ সালে এসে ক্যাপাসিটিসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং সর্বোচ্চ উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এত নজিরবিহীন অর্থ ব্যয় করেও কেন পুনরায় দেশের জনগণকে লোডশেডিংই বরণ করতে হচ্ছে, আজ কেন তবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে সাশ্রয়ী হওয়ার নসিহত দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন কেন সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, কেন বিদ্যুৎ খাত আজ অর্থনীতির জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে? এর উত্তর একটাই, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি আর হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বিশেষ প্রয়োজনে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস রাখা হচ্ছে আদর্শ নিয়ম। চলতি শতকের শুরুর দিক পর্যন্ত বাংলাদেশেও এর বড় ব্যতিক্রম ছিল না। এটা বেশি হলে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান জবাবদিহিহীন সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র রেখেছে প্রায় ৬০ শতাংশ। আর বসিয়ে বসিয়ে তাদেরকে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করে যাচ্ছে। এ অর্থ জনগণের অর্থ। এই ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ খাত দেউলিয়া হচ্ছে। 

ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের পরিকল্পনা বিভ্রম ও সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে বিদ্যুৎ খাতে যে অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তার সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে জ্বালানি আমদানি সঙ্কট। সরকার দেশের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির ব্যাপারে কাতার বা ওমানের সাথে পুরো জ্বালানি চাহিদা মেটানের মতো দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তি না করে এর অংশ বিশেষ সিঙ্গাপুরভিত্তিক স্পট জ্বালানি বাজার থেকে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে সাত ডলারে যে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে তা এখন স্পট মার্কেট থেকে ৩৮ ডলারে পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন