আবহাওয়া

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’, আঘাত হানবে রোববার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ পরিণত হয়ে রোববার (২৬ মে) মধ্যরাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের সমুদ্র তীরবর্তী এবং আশপাশের অঞ্চলে আঘাত হানতে শুরু করতে পারে। এরপর শক্তি সঞ্চয় করে পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ধীরে ঘনীভূত হচ্ছে। জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়াবিদ মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, 'এখন পর্যন্ত মডেলগুলো তথ্য বিশ্লেষণক করে দেখা যাচ্ছে, রাত ৯টার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে গভীর নিম্নচাপটি। তবে প্রায় তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্ব হতে পারে।'

তিনি বলেন, 'ঝড়টি শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীকাল রাতে এটি উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আমরা মনে করছি। খেপুপাড়া ও পশ্চিমবঙ্গে সাগর আইল্যান্ড ঘেঁষে ঝড়টি স্থলভাগ অতিক্রম বলে আমরা মনে করছি। তবে সন্ধ্যা থেকেই ঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব উপকূলীয় এলাকায় দেখা যাবে। ঝড়ের প্রভাবে কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।'

ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ থাকে প্রতি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। বাতাসের গতি ৮৯ থেকে ১১৮ কিলোমিটার থাকলে প্রবল, ১১৯ থেকে ২১৯ পর্যন্ত অতি প্রবল এবং বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের বেশি থাকলে সুপার সাইক্লোন বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

আবুল কালাম মল্লিক বলেন, 'উপকূল অতিক্রমের সময় যদি ওই এলাকায় জোয়ার থাকে সে ক্ষেত্রে তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হলে পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের উচ্চতা তিন দশমিক ২২ ফুট।'

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ঝড়টি ভারতের উপকূল ঘেঁষে এলে শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ কম পেত। সাগরের মধ্যভাগ দিয়ে আসায় শক্তি সঞ্চয়ের জন্য চারপাশে উপযোগী পরিবেশ আছে। আগামীকাল সকালে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, উপকূলীয় ওই এলাকায় পশুর নদীসহ অন্যান্য যে নদীগুলো আছে, সেগুলোতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভাটা হয়। আবার রাত ১২টা থেকে জোয়ার হয়। যদি জোয়ারের সময় ঝড়টি স্থলভাগ অতিক্রম করে তাহলে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে।

ঝড়ের প্রভাবে কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে এবং এর ফলে ভূমিধস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আজিজুর রহমান।

টিআর/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন