পুলিশের ওপর হামলা: চার হিজড়ার রিমান্ড মঞ্জুর
রাজধানীর পরীবাগে ছিনতাই ঠেকাতে গিয়ে আক্রমণের শিকার হয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোজাহিদুল ইসলামের চোখ হারানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার তৃতীয় লিঙ্গের চার সদস্যের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গ্রেপ্তারকৃত হিজড়ারা হলেন- তানিয়া (১৯), তন্নী ওরফে তিথি (২১), কেয়া ২০ এবং সাথী ওরফে পাভেল (২০)।
সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমনা জোনের ডিসি মুহাম্মাদ আশরাফ হোসেন।
এদিকে হামলাকারীরা নকল হিজড়া বলে দাবি করছে পুলিশ। তাদের ভাষ্য, গ্রেপ্তারকৃতদের পুরুষাঙ্গ ঠিকই আছে। তবে মেডিকেল পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে আশরাফ হোসেন বলেন, “হিজড়ারাও আমাদের সমাজের একটি অংশ। কিন্তু কিছু হিজড়া দুষ্টু, তারা কমিউনিটি নিয়ে চলে, তাদের সঙ্গে আবার কিছু আছে সুস্থ মানুষ। হিজড়ার বেশ ধরে চলে।”
তথাকথিত এসব হিজড়াকে আর ছাড় দেয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
তিনি বলেন, “রাজধানীতে যেসব হিজড়া সড়ক, পরিবহন ও বিভিন্ন বাসাবাড়িতে চাঁদাবাজি করে তাদের বিরুদ্ধে বিগত ছয়মাস ধরে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে আমরা খুব কঠোর অবস্থানে আছি। ডিএমপির আট বিভাগেই এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টিকারী হিজড়াদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। পরীবাগের ঘটনার পরে হিজড়াদের বিষয়টি আমাদের অবাক করে দিয়েছে।”
এসময় তিনি জানান, আহত পুলিশ সদস্যের চোখে আলো ফেরাতে সব চেষ্টা করা হবে পুলিশের পক্ষ থেকে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিসি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, “শুক্রবার রাত ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ও এসআই মো. মোজাহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ইস্কাটন গার্ডেনে নেভি কোয়ার্টার্সে ডিউটি করছিলেন। এসময় পাশেই পরীবাগ ফুটওভার ব্রিজের কাছে কয়েকজন রিকশাচালক ও পথচারীর চিৎকার শুনতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কয়েকজন হিজড়া/হিজড়া বেশধারীকে ছিনতাই করতে দেখতে পান। পুলিশের টিমটি তখন হিজড়াদের ছিনতাইয়ে বাধা দিলে তারা অতর্কিতে পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে এবং ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকে। একপর্যায়ে হিজড়াদের ছোঁড়া ইট-পাথরের একটি টুকরা এসআই মোজাহিদুল মারাত্মকভাবে জখমপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন হিজড়াদল ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়।” তিনি জানান, আহত মুজাহিদকে রাজারবাগ সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতাল ভর্তি করা হলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।