উড়াল সড়কের দাম ১৫ লাখ!
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খয়রত গ্রামের সেরা আকর্ষণ ‘উড়াল সড়ক’। উড়াল সড়কের ওজন ৩৫ মণ। লম্বায় ৯ ফুট। খামারের মালিক আদর করে তার বিশাল আকৃতির এ গরুর নাম রেখেছেন ‘উড়াল সড়ক’। ইতোমধ্যেই ফেসবুকের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ৩৫ মণ ওজনের ওই গরুটি। কোরবানির হাটে বিক্রি করতে খামার মালিক ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া তার গরুটিকে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উড়াল সড়ক নামের গরুটির সাদাকালো বর্ণের। বেশ শান্ত স্বভাবের। তবে বাইরে বের হলেই মাথা বিগড়ে যায় তার। উড়াল সড়কের ওজন প্রায় ১৪শ কেজি ও লম্বায় ৯ ফুট। শরীরে তেল চকচকে পশম। খিদে পেলে ঘাস-পানি খায়। এই গরু দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছেন শত শত মানুষ। দূর থেকে আসছেন ক্রেতারাও। মালিক দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা।
খয়রত গ্রামের আসাব মিয়া বলেন, উড়াল সড়ক গরুটি আমাদের গ্রামের ঐতিহ্য। আমাদের গ্রামে এমন গরু কখনো দেখিনি। গরুটি দেখতে খুবই সুন্দর।
একই এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, হাওর থেকে আমাদের এলাকায় উড়াল সড়ক নির্মাণ হবে। সেই নামে গরুটির নামকরণ করা হয়েছে উড়াল সড়ক। আমার জীবনে এত বড় গরু দেখিনি। ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে গরুটি ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকে দূর-দূরান্ত থেকে গরুটি দেখতে অনেক লোকজন আসছে।
করিমগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং বড় গরুর মধ্যে এটি একটি। ‘উড়াল সড়ক’ যেনতেন গরু নয়।
ব্যতিক্রম এই নামকরণের বিষয়ে খামারি ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মিঠামইন উপজেলা থেকে খয়রত গ্রাম পর্যন্ত একটি উড়াল সড়ক করছেন। সড়কটি খামারের পাশ ঘেঁষে নামবে। এ কারণে আমি শখ করে আমার খামারের বড় গরুটির নাম রেখেছি ‘উড়াল সড়ক’।
তিনি আরও বলেন, চার বছর বয়সী এই গরুটি হলেস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের। এর দাঁত আছে ছয়টি। প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ কেজি খাবার খায়। কাঁচা ঘাস, শুকনো খড়, গমের ভূষি, ধানের কুড়া, ছোলা, মিষ্টি কুমড়া খায়। প্রতিদিন গরুটির পেছনে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা খরচ হচ্ছে। এই খামারের এক গাভী থেকেই উড়াল সড়কের জন্ম হয়েছে। গত বছর উড়াল সড়কের ওজন ছিল ১২শ কেজি। তখন দাম উঠেছিল সাড়ে সাত লাখ টাকা। এ বছর ওজন ১৪শ কেজি ছাড়িয়ে গেছে। প্রাণী চিকিৎসকদের সহযোগিতায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফিতার মাপে ওজন নিশ্চিত করা হয়েছে। গরুটির ওজন প্রতি সপ্তাহে দেড় থেকে দুই কেজি করে বাড়ছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র পন্ডিত গণমাধ্যমে বলেন, আমরা নিয়মিত এই খামারটি তদারকি করছি। প্রায়ই ৩৬ মণ ওজনের এই গরুটি এবার কোরবানি হাটে প্রধান আকর্ষণ হবে। উড়াল সড়কের মালিক একজন সফল উদ্যোক্তা। তিনি অনেক পরিশ্রমী।
এএম/