দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামে কোরবানির জন্য প্রস্তুত প্রায় তিন লাখ গবাদি পশু

আসন্ন ঈদুল আজহায় দেশের উত্তরের সীমান্তঘেষা জেলা কুড়িগ্রামে  কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৩ লাখ গবাদি পশু। চলতি মাসের ৫ জুন বুধবার থেকে জেলার প্রতিটি হাট-বাজরে আনুষ্ঠানিকভাবে পশু কেনা-বেচা শুরু হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবারে কোরবানি ঈদে গরু ছাগল ও ভেড়া মিলে কোরবানির পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার। এর বিপরীতে ফুলবাড়ীতে ৩৭ হাজার গবাদিপশুসহ ৯ উপজেলায় প্রায় ২ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ গবাদিপশু পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার এবং  ১ লাখ ৬৪ হাজার ছাগল ও ভেড়া পালন করা হচ্ছে।

খামার ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ে এসব পশু পালন করা হচ্ছে। প্রয়োজন মিটিয়ে ৬৪ হাজারের বেশি পশু অতিরিক্ত থাকবে জেলায়। এসব পশু বিক্রি করা হবে।

তবে খামারিরা আশঙ্কা করছে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করায় অনেকের লোকসান গুণতে হবে। এ জন্য তারা চোরাচালান ঠেকাতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রাখার দাবি জানিয়েছে। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে ২৭৮ কিলোমিটার  সীমান্তবর্তী জুড়ে কঠোর নজরদারির অনুরোধ জানিয়েছেন খামারিরা।

অধিকাংশ খামারিরা জানান, ভালো দামের আশায় কোরবানির পশু লালনপালন করেছেন তারা। বাজারে গো-খাদ্যের অতিরিক্ত দাম। হাটে ভালো দামে গরু বিক্রি করে হাতে বাড়তি টাকা আসলে নিজেকে সফল মনে হয়। এ ছাড়া যদি ভারতীয় গরু সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশ না করলে বাজার গরুর দাম ভালো পাওয়া যেত। এতে সব খামারিরা লাভবান হবেন। আর দেশীয় খামারিদের রক্ষায় ভারতীয় গরু যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত পেরিয়ে দেশে প্রবেশ না করে এবং গো-খাদ্যের কমানোর দাবি জানিয়েছেন খামারিরা।

ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাট এলাকার খামারি নেওয়াজ শরিফ শিমুল জানান, ভালো দামের আশায় কোরবানির পশু লালনপালন করেছি। আগে গো -খাদ্যের দাম কম ছিল লাভ অনেক বেশি হয়েছে। কিন্তু বাজারে গো- খাদ্যের দাম অনেক বেশি। তাই এখন লাভ কম হচ্ছে খামারিদের। এই খামারিকে ভারতীয় গরু আসার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানিয়েছেন ভারতের গরু টুকটাক আসলেও আমাদের খামারিদের কোন প্রভাব পড়বে না। এ বছর দামও ভালো দেখা যাচ্ছে। তার খামারে মোট গরু ৩৩ টি রয়েছে । এর মধ্যে বড় ষাড় টি ও ছোট ষাড় ৫ টি। বাকিগুলো গাভী ও ছোট ছোট বাছুর।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান কনক জানান, খামারিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। উন্নয়নের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে তারা যেন গরু উৎপাদন করতে পারেন। এবার কোরবানির ঈদে উপজেলায় ১২ হাজার ১৯৭  টি গরু ও মহিষ এবং ২০ হাজার ৩৫০ টি ছাগল ও ভেড়া লালনপালন করা হয়েছে। সর্বমোট প্রাপ্যতা ২৪ হাজার ৫৭৮ টি ও চাহিদা ২১ হাজার ৭৭০ টি ও উদ্বৃত্ত আছে ১৪ হাজার ৫৭৮ টি বলে জানান প্রাণিসম্পদ বিভাগের এ কর্মকর্তা।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনুমা তারান্নুম জানান, এ উপজেলার পশুরহাটগুলোতে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। সেই সাথে পাঁচারকারীরা যাতে ভারতীয় গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে বিজিবিকে জানানো হয়েছে। বিজিবি সীমান্তে টহল জোড়দার অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন