আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

জনগণ ইভিএম চায় না : চরমোনাই পীর

জনগণ ইভিএম চায় না। সুন্দর পরিবেশে নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছেন কেন? দুইবার ধোঁকা দিয়ে জনগণকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে ‘টুনটুনাটুন’শব্দ করেছেন। এবারো সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এবার ইভিএমের ‘টুনটুনাটুন’ নির্বাচন হতে দেবে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বললেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আজ শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সংগঠনটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

রেজাউল করীম বলেন, সরকার উন্নয়নের শুধু উন্নয়নের বুলি আওড়ায়। এ উন্নয়ন জনগণের মনে শান্তি দিতে পারেনি। বরং জনমনে অশান্তির আগুন ধাই ধাই করে জ্বালিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ‘সরকারি কমিশন’। নির্বাচন কমিশনার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। ১৯ দল সেখানে অংশ নিয়ে ইভিএমের বিরুদ্ধে মত দিয়েছে । আওয়ামী লীগসহ সমমনা চারটি দল ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ৯টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি। কারণ বিগত দিনে সংলাপে আমরা গিয়েছিলাম, কিন্তু আমরা বার বার দেখেছি, ধোঁকা দিয়ে বোকা বানিয়ে তারা তাদের চিন্তা-চেতনা বাস্তবায়নের পথ খোলাসা করেছে।

তিনি আরও বলেন, আজ যদি ১৯টি দলের মতামতকে গুরুত্ব দিতেন তাহলে ইভিএমের প্রয়োজন ছিল না। ইভিএমের পক্ষে তবে এতো যুক্তি কী? বাংলাদেশের জনগণ ইভিএমে ভোট চায় না। তবে কেন ইভিএমে ভোট? কেন এত ইচ্ছুক, এতো ঝোঁক কেন? আপনারা ইভিএমে যে ভোট চুরি করবেন, সেটা জনগণ ভালমতো বুঝে গেছে। চুরি আর কতো দিন করবেন? চোরের দশ দিন, গেরস্তের এক দিন। যেদিন দেশের জনগণ চেপে ধরবে, সেদিন আর বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত হবেন। ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না।

রেজাউল করীম বলেন, জনগণ ইভিএম চায় না, তবুও ইসি ঘোষণা করেছে দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট নেবে। এই ইসি যে সরকারের হয়ে কাজ করছে, সেটাই প্রমাণ হলো। বেশিরভাগ দল ইভিএমের বিপক্ষে মত দেওয়ার পরও ইসি চার দলের পক্ষে মতামত দেয় কীভাবে? নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ বলেছিল, মদিনার সনদে নাকি দেশ পরিচালনা করবে। মদিনা সনদ করেছিলেন হজরত মোহাম্মদ (সা.)। বোঝা গেলো দুনিয়াতে শান্তি তালাশ করলে ইসলামের বিকল্প নেই। তার উদাহরণ বাংলাদেশ। বাংলাদেশে শান্তি নেই। সিলেবাসে এম এ ক্লাস পর্যন্ত দ্বীনি শিক্ষা রাখা হয়নি। বরং ধোঁকাবাজি শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিকই রাখা হয়েছে। ছাত্ররা মুরুব্বিদের কথায় চলছে—এটা ছাত্র আন্দোলন প্রমাণ করেছে। অন্যদিকে যদি দেখি, তাহলে দেখবেন কেলেঙ্কারি অবস্থা। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সম্পর্কে পর্যালোচনা করে দেখবেন, চাঁদাবাজি, জুলুমবাজি, অস্ত্রবাজি ও সন্ত্রাস। কিন্তু ৩১ বছরেও আমাদের ছাত্রদের বিরুদ্ধে এ রকমের কোনো ইতিহাস নেই।

ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, বাংলাদেশের ব্যতিক্রমী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন। ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা কখনো সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা, হলে চাঁদা আদায় করে না। আদর্শবাদী সংগঠন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন। এক জেলায় সরকার দলীয় ছাত্র নেতাই দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। আজ শতকরা ৯৭ জন সংসদ সদস্য দুর্নীতিবাজ। এক চোর আরেক চোর, এক দুর্নীতিবাজ কি আরেক দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে? শুধু আওয়ামী লীগই ভোট চোর নয়, বিএনপি এ পথ দেখিয়েছে। এ কারণে আজ ভোট চোর আওয়ামী লীগ জেঁকে বসেছে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ পূর্বনাম ছিল ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। ১৯৯১ সালের ২৩ আগস্ট এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ৫ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে সংগঠনটি পরিচালিত হয়। সংগঠনটির ২০২১–২০২২ সেশনে হিসেবে সভাপতি নূরুল করীম আকরাম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শেখ মুহাম্মাদ আল আমিন দায়িত্ব পালন করছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন