দেশজুড়ে

সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের দই-মিষ্টি, স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সর্বত্র বিক্রি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের দই ও মিষ্টি। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নিম্নমানের  অস্বাস্থ্যকর ও মানহীন দই ও মিষ্টি।

স্থানীয় মানুষজন না বুঝে এ সব খাদ্য সামগ্রী সহজলভ্য ও দাম কম হওয়ায় কিনে খাচ্ছেন। ফলে অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের এ সব খাবার খেয়ে ডায়রিয়া, আমাশয় ও চর্মরোগসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে দাবী জানিয়েছেন সচেতনমহল।

জানা গেছে, মান নিয়ন্ত্রণহীন এ সব খাবার তৈরি করার সময় আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন ধরণের রঙ ও স্যাকারিং ব্যবহার করে। সেই সাথে বাসি পচা দুধ ও ছানার ব্যবহার করা হয়। নিদিষ্ট মেয়াদহীন এ সব দই ও মিষ্টি মাসের পর মাস ধরে বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করেন। এ সব খাদ্য সামগ্রীর প্রধান ক্রেতা বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরা। এছাড়াও বিভিন্ন হাট-বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার সোনাতলা থেকে দই ও মিষ্টি বিক্রেতাদের কাছ থেকে অস্বাস্থ্যকর ও মানহীন এ সব দই ও মিষ্টি কিনে মজুদ করছে। পরে ওই সব ব্যবসায়ী বগুড়ার  ভালো মানের স্বাস্থ্যকর দই-মিষ্টি হিসাবে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন বলে জানা গেছে। ফলে এ সব নিম্নমানের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য সামগ্রী বিভিন্ন বাজারসহ বিদ্যালয়ের আশেপাশে যাতে অবাধে যেন বিক্রি না হয় তার জন্য প্রশাসনের নজরদারীর প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল।

ফুলবাড়ীতে এসে বগুড়া সোনাতলা এলাকার দই বিক্রেতা ফজলুল মিয়া ও জহুরুল ইসলামকে অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের দই বিক্রির বিষয়ে প্রশ্ন করলে এই দুই বিক্রেতা উত্তরে জানান, এই দই গুলো অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের না। এক দুধের দই হয় ২০ থেকে ২৫ কেজি। সেই দই হলো এক নাম্বার। সেগুলো  বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। আর এক মন দুধের দই হয় ৩৫ কেজি। সেই দই দুই নাম্বার। আমরা দুই নাম্বার দইটি মুলত বিক্রি করছি। এগুলো আমরা বগুড়া সোনাতলায় ৯০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছি। এখানে আমরা বিক্রি করছি ১৮০,২০০ ও ২৫০ টাকা কেজি দরে। তবে এই দই গুলো দুই নাম্বার হলেও অস্বাস্থ্যকর কিংবা নিম্নমানের নয় বলে দাবী করেন দুই বিক্রেতা।

নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ সরকার ও জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পেটের পীড়াসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে । উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারসহ বিদ্যালয়ের আশপাশে নিম্নমানের এসব খাদ্য সামগ্রী বিক্রি বন্ধের দাবি জানিছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প.প. কর্মকর্তা ডা: সুমন কান্তি সাহা জানান, এসব নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী খেলে বিশেষ করে শিশু ও কমোলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। কারণ এই সব ফুটপাতে খাবার খেলে অবশ্য পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, আমাশয় ও চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগের মারাক্তক ঝুঁকি থাকে। তাই এসব নিম্ন মানের খাদ্য সামগ্রী শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষজন যাতে সেবন না করে সে ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিটি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জনসচেতন মুলক সভা সেমিনার অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার  আহবান জানান এ কর্মকর্তা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)  রেহেনুমা তারান্নুম জানান, অস্বাস্থ্যকর ও নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন