আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার যৌক্তিকতা নেই

পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিশ্চিত না করে চব্বিশ ঘণ্টা ওষুধের দোকান খোলা রাখার যৌক্তিকতা দেখছেন না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তবে কোনো হাসপাতাল ২৪ ঘণ্টা ওষুধের দোকান খোলা রাখার আবেদন করলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ অগাস্ট) বিকেলে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের ষোড়শ করপোরেশন সভার সূচনা বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।

ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকান চব্বিশ ঘণ্টা খোলা রাখার যৌক্তিকতা আমরা দেখি না। কারণ, যেখানে রোববার থেকে বৃহস্পতিবারে সুনির্দিষ্ট সময়ের পর, শুক্র-শনিবার এবং রাতের বেলা চিকিৎসকই পাওয়া যায় না, সেখানে ওষুধের দোকান কেন খোলা রাখা হবে? আগে তো চিকিৎসক নিশ্চিত করতে হবে। তারপরই তো চিকিৎসা সেবার জন্য ওষুধের দোকান খোলা রাখতে হবে। তারপরও কোনো হাসপাতাল থেকে যদি লিখিত কোনো আবেদন আসে, আমরা অবশ্যই সেটা বিবেচনা করব।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে বিচ্ছিন্নভাবে নানা মাধ্যমে আলোচনা হলেও করপোরেশন এখনো কোনো পক্ষ বা ব্যক্তি থেকে কোনো আবেদন পায়নি। ঘোষিত গণবিজ্ঞপ্তির সময়সূচি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। শুধুমাত্র হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকানগুলো খোলা রাখার বিষয়ে বিভিন্নভাবে বলা হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট অংশীজন যারা আছেন, তারা কিন্তু আমেদের কাছে কোনো লিখিত আবেদন করেননি।

মেয়র বলেন,, এছাড়াও গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘোষিত সময়সূচির বাইরে যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যাবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে যথাযথ যৌক্তিকতা সহকারে করপোরেশনের কাছ থেকে পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি সময়সূচি উপস্থাপন করেছি এবং আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এটি কার্যকর করতে চাই। সেখানে দোকানপাট, বিপণি-বিতান, কাঁচাবাজার, রেস্তোরাঁর রান্নাঘর ও খাবার সরবরাহ, চিত্ত-বিনোদনসহ প্রেক্ষাগৃহ ইত্যাদির জন্য সমসয়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ওষুধের দোকানগুলোর জন্য বিশেষভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাড়া-মহল্লার ওষুধের দোকান রাত ১২টা আর হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকানগুলোকে রাত ২টা পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এর বাইরে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যাবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায়, তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। সেখানে ওই প্রতিষ্ঠান বা তাদের কার্যক্রম কেন অত্যাবশ্যকীয়- সেটা যথাযথ যুক্তির মাধ্যমে জানাবে। আমরা সেটা বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কার্যক্রমকে বর্ধিত সময় দেবো। কিন্তু ঢাকা শহরকে একটি সুনির্দিষ্ট সময়সূচির মধ্যে আনতেই হবে।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, সময়সূচির সঙ্গে করপোরেশনের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম ও শহরের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। শুধু অবকাঠামো উন্নয়নেই একটি শহরকে পরিচালনা করা যায় না। তার সাথে সাথে আনুষঙ্গিক যত বিষয় রয়েছে সেগুলোরও সংযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট সময়সূচির সাথে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা জড়িত। যখন সবকিছু একটি সূচির আওতায় আসবে তখন আমরা কার্যক্রমগুলো আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারব। ঢাকাবাসীকে ফলপ্রসূ ও কার্যকর সেবা প্রদানের পাশাপাশি একটি উন্নত ঢাকা উপহার দিতে পারব।

মেয়র বলেন, আপনারা অবশ্যই এই সময়সূচি নিশ্চিত করবেন। এলাকা, পাড়া-মহল্লায় যাতে সকলেই সূচি মেনে যেন কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে, সেটি নিশ্চিত করবেন। এর ব্যত্যয় হলে আমরা আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেব। সেলক্ষ্যে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।

বিআ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন