দেশজুড়ে

পাবনায় অবৈধ তেল পাম্পের রমরমা ব্যবসা

পাবনায় একের পর এক গড়ে উঠছে অবৈধ তেলের পাম্প।  এসকল তেলপাম্পের নেই কোন অনুমোদিত কাগজপত্র। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এসব কার্যক্রম চালালেও দেখার  কেউ নেই।

ছোট ছোট দোকানে ফিলিং স্টেশনের মতো ডিসপেন্সার মেশিন বসিয়ে বিক্রি হচ্ছে পেট্রল, অকটেন। অথচ এগুলোর নেই কোনো ডিলারশিপ কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন। জ্বালানি তেল বিক্রির এ ব্যবস্থা পরিচিত মিনি পাম্প নামে।

পাবনার চাটমোহর ফরিদপুর ও ঈশ্বরদীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুড়ে দেখা যায়,  বিভিন্ন সড়কের পাশে জ্বালানি তেল বিক্রির বেশ কিছু দোকান গড়ে উঠেছে। আরও কয়েকটি দোকান চালুর অপেক্ষায়। এসব পাম্পে ভেজাল তেল সরবরাহের যেমন আশঙ্কা আছে, তেমনি আছে নিরাপত্তা ঝুঁকিও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ধরনের মিনি পাম্প চলছে দুই বছরের বেশি সময় ধরে। স্থানীয় প্রশাসন, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা  জানিয়েছেন, এ ধরনের ব্যবস্থাপনায় তেল বিক্রির কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি।

পাবনার ব্যাবসায়ী শফিকুল ইসলাম খান বলেন, এ সব তেলপাম্প সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে। এতে রয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। তাছাড়া এসব তেলপাম্প তৈরি করার কারণে বিপাকে রয়েছেন মূলধারার ব্যবসায়ীরা। তারা কোটি কোটি টাকা খরচ করেও পাম্পের অনুমোদন পাচ্ছেনা। সরকারও কোনো রাজস্ব পাচ্ছেনা৷ এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করা দরকার।

পাবনায় নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মো: জাকির হোসেন বলেন, কিছু ব্যক্তি অসাধু উপায়ে বেশি অর্থ লাভের আশায় সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে। তাদের কঠোরভাবে দমন করা প্রয়োজন। তাছাড়া ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিণতি দাঁড়াবে।

পাবনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, অনুমোদনহীন এসব তেল পাম্প স্থাপন করার কারণে কিছু জনগণের সাময়িক সুবিধা হলেও প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। খেয়াল করলে দেখা যায় এসব তেল পাম্প বেশিরভাগই বাসা বাড়িতে এবং দোকানে নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে সিগারেট খাচ্ছেন স্থানীয়রা। যেকোনো সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন।

এ সকল তেল পাম্প কিভাবে চলছে জানতে চাইলে পাম্প কর্তৃপক্ষ কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে সেখানে থাকা কয়েকজন কর্মচারীদের কাছে জানা যায়, প্রত্যেকটি পাম্প থেকে প্রতিদিন প্রায় ২শ লিটার তেল বিক্রি করা হয়।

পাবনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সহকারী পরিচালক মো: শারফুল আহ্সান ভূঞা বলেন, এসব তেল পাম্পের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিক প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা প্রয়োজন। তাছাড়া যে কোন সময় বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

পাবনা জেলা প্রশাসক মু. আসাদুজ্জামান বলেন, অনুমতি না নিয়ে কোন প্রকারের তেল পাম্প নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই। কেউ যদি এরকম কাজ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেএস/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন